
প্রাঞ্জল বর্ষা
আকরাম হাবিবী ইরান
বর্ষার বৃষ্টি সেতো স্রষ্টার এক অপরূপ সৃষ্টি।
দেখি অভূতপূর্ব প্রাঞ্জল দৃশ্য যতদূর যায় দৃষ্টি।
নীল আকাশে ভেসে উঠেছে নান্দনিক দৃশ্যের রংধনু।
উন্মুক্ত মাঠে হাঁকছে বিরামহীন ছাগ,ছাগী ধেনু।
মেঘ মালার মিলনে ছেয়ে গেছে নীলাকাশ।
হিমেল হাওয়ায় বারি ঝরে বেরোনোর নেই অবকাশ।
মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে নিত্য সোনালি রবি।
বন্দীগৃহে কেউ বা গায়ক, কেউ হয়ে গেছে কবি।
ভেসে উঠা সোনালী স্মৃতি নিয়ে লিখে, কবিতা গান নিরবধি।
দুষ্টু ছেলেদের ঘরে কবু রাখা যায় না তো বন্ধী।
কাদা মাটিতে খেলাধুলা করতে খোঁজে নানান ফন্দী।
মানেনা কোন শাসন বারণ,কাদা মাটিতে করে পদচারণ।
রোমাঞ্চকর বর্ষার বৃষ্টিই তার কারণ।
কুড়িয়ে নিয়ে মানকচুর পাতা,বানিয়ে নেয় ছাতা।
দুর্বার গতিতে ছুটে বেড়ায় আম্রকাননের যথাতথা।
নাক ফুলিয়ে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ডাকে যখন কোলা ব্যাঙ।
ইট পাটকেল নিয়ে ছুটে দুষ্টু ছেলেদের ঘ্যাং।
আবার তারা কল্পনা করে হয়তাম যদি মাঝি।
থইথই টলোমলো নদীর জলে খেয়া ভাসায়তাম আজি।
পরক্ষণেই বানিয়ে নেয় কলা গাছের ভেলা।
বৃষ্টির পানিতে ভাসিয়ে জমায় মহা আনন্দের মেলা।
বর্ষায় ফোটা কেয়া, কামিনী হরেক রকম ফুল।
খুঁজে খুঁজে কোচড় ভরতে করেনা তারা ভুল।
বয়স্করা সারাদিনভর পাকায় পাটের রশি।
অসহায়েরা জীবিকার ধ্যানে বারান্দায় থাকে বসি।
জেলেরা জাল বুনছে নিপুণ শিল্পীর মতো।
ভাটিয়ালি সুরে প্রকাশ করছে মনে সুখ আছে যতো।
অনেকে আবার মাছ ধরায় গভীর ভাবে ব্যস্ত।
কেউবা আবার ঘরে বসে করছে, মাছ ধরা কলাকৌশল রপ্ত।
গুণবতী রমণীরা ভাজে খই,মুড়ি, ছোলা বুট।
কাজের সময় খায় সবাই করে কুট কুট।
আরো বানায় হরেক রকম মনোহরি পিঠা, পায়েস।
ইচ্ছেমতো পূরণ করে মনের যত খায়েশ।
সুকেশিনী রমণীরা করে নকশীকাঁথা সেলাই।
কেউবা আবার রূপচর্চায় সারাদিন কাটায়।
গ্রামবাংলার প্রকৃতি এই চিরায়ত দৃশ্য।
কালের আবর্তে যাচ্ছে হয়ে প্রায় অদৃশ্য।
প্রকৃতি রক্ষায় রাখতে হবে মোদের যুগান্তকারী অবদান।
তবেই বাংলার চিরচেনা সোনালি দৃশ্যগুলো যুগ-যুগান্তরে থাকবে অম্লান।