ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় যে কোনো ধরণের মাদক।এই গ্রামগুলি যেন মাদকের উন্মুক্ত হাট।জেলা সদর থেকে প্রতিদিন শত শত মটর সাইকেল নিয়ে উঠতি বয়সের যুবকরাসহ এলাকার বিভিন্ন বয়সের যুবকরা মাদক সেবন করতে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। উপজেলার মোগড়া, মনিয়ন্দ, আখাউড়া উত্তর ও আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই চলে মাদকের উন্মুক্ত বেচা-কেনা আর এসব মাদক যারা বিক্রয় করে তারা বিভিন্ন প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা। চোখের সামনে এমন অপকর্ম হলেও এই মাদক বিক্রেতাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলে না। যদি কেউ প্রতিবাদ করে তাহলে তাকে প্রথমে মারপিট করা হয় পরে মাদক দিয়ে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানো হয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দিয়ে। তাই এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। এইসব দেখতে দেখতে এলাকাবাসীর যেন সব সয়ে গেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর, রাজাপুর, কল্যাণপুর, আনোয়ারপুর, দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা, হীরাপুর, আব্দুল্লাপুর সাহেব নগর, নূরপুর মাদকের ছড়াছড়ি যেখানে সেখানে পড়ে আছে ভারতীয় স্কফ, ফেন্সিডিলের খালি বোতল সহ ইয়াবা সেবন শেষে ফেলে দেওয়া ফয়েল পেপার, পাইপ ও আগুনে পুড়ে যাওয়া টাকা। দেখে মনে হয় আখাউড়া উপজেলায় যেন মাদকের স্বর্গরাজ্য। ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা আখাউড়া উপজেলার আরেকটি মাদকের স্বর্গরাজ্য ইউনিয়ন হলো মনিয়ন্দ ইউনিয়ন এই এলাকার শিবনগর, হরিপুর, নয়ামোড়া, ইটনা, ঘাগুটিয়া এলাকায় চলে উন্মুক্ত মাদকের রমরমা বাণিজ্য এই বাণিজ্য চলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। এই সিন্ডিকেটের বাইরে গেলে হত্যার শিকার পর্যন্ত হতে হয়। গত বছর এই মাদক সিন্ডিকেটের দ্বন্দ্বে হত্যা করা হয়েছে নয়া মোড়া এলাকার নাজু নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে। সীমান্তের শূন্য রেখার পাশে বসবাসের সুযোগটা ভালোভাবে নিয়েছে মোগড়া ইউনিয়নের জয়নগর, বাউতলা, উমেদপুর, ছয়ঘড়িয়া আর খলাপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা এইসব এলাকা থেকে ইয়াবাসহ ফেন্সিডিল আর স্কফ এর বড় বড় চালান যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। মাদকের এমন রমরমা বাণিজ্য নিয়ে বিজিবিসহ প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় জনমনে জন্ম দিয়েছেন নানা প্রশ্ন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মাদক বিরোধী অভিযানে কিছুটা বিঘ্ন হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযান চলমান এবং তা হবে কঠোরভাবে। মাদকের বেলায় কাউকে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। মাদক বিক্রেতা আর মাদক সেবন কারি যাকেই ধরা হবে এখন থেকে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।