তাহের আহমেদ চৌধুরী বাদলঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নভেল করোনা ভাইরাসই পৃথিবীর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এত বড় যুদ্ধে, এত কঠিন যুদ্ধে বোধ হয় আগে কখনও মানুষকে নড়তে হয়নি। যে যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে চোখে দেখা যায়না।
যে যুদ্ধে গুলি বোমা, রকেট লঞ্চার, এমনকি কোন পরমাণু অস্ত্রও কার্যকর হয়না। অথচ যে যুদ্ধে আণুবীক্ষণিক মারন প্রতিপক্ষ “কোভিড-১৯” এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিপক্ষকে। এই করোনা আমদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই জগতে যা কিছু ঘটে তার পিছনে একটা পারমার্থিক বা আধ্যাত্বিক কারন রয়েছে। যে শক্তির কাছে পৃথিবীর সব শক্তিই অসহায়।
তবে মানব সভ্যতার জন্য সবচেয়ে ঘৃণ্য ও লজ্জার বিষয় হল করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি বা করোনায় মৃত ব্যক্তির কাছে যাওয়া, তার লাশ স্পর্শ করা বা মৃত ব্যক্তির লাশ স্পর্শ করাটাও যেন আরেক মহা মৃত্যু আতঙ্ক বা মৃত্যুর মারণাস্ত্র।
কিন্তু ছেলেবেলায় শরৎচন্দ্রের “বিলাসী” গল্প ও রাজলক্ষী শ্রীকান্ত উপন্যাসে পড়েছি মৃতের জাত নাই, সে শরীরে কোন কিছুইর সক্রীয়তা নাই। জীবন্ত কোন কিছুর অস্থিত্ব ও নাই বটে। তাহলে তাকে স্পর্শ করলে সংক্রমণ হওয়ার কোন কারন আমি বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে বা ধর্মীয় যুক্তির অযুহাতে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করিনা।
এটা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাসকে চতর ঢাকার কালিমায় লেপিয়ে দিয়েছে বলে মনে করি।
এই করোনা আমাদের সামাজিক দুরত্ব বাড়িয়ে আমাদেরকে কোন এক নূতন প্রজন্মের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। তবে বিশ্ব মানবতার একটা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এখানে লক্ষণীয়।
আমাদের শিক্ষার বিষয় হল, সব ক্ষমতা, সব সম্পদ ও সব সম্মানের মালিকানা মহান আল্লাহ্ তাআলার। আল্লাহ্ যার প্রতি মেহেরবান হন শুধু তাকে সব ভোগ করার অধিকার দিয়ে থাকেন। আল্লাহ্র ক্ষমতার কাছে মানুষ খুবই নিরীহ ও অসহায়। ধর্ম, বর্ণ ভেদে সব মানুষই আল্লাহ্র সৃষ্টি আশরাফুল মাকলুকাত। আসুন আমরা সবাই সবার প্রতি মূল্যবোধ ও সম্মানবোধ রেখে পথ চলি। আগামী প্রজন্মকে একটা পরিবেশ বান্ধব সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়ার জন্য একসাথে কাজ করে যাই।