কারাগার থেকে ফোনে বাবার সঙ্গে মিন্নির কান্নাকাটি

0 ২৩০

বরগুনার চাঞ্চল্যকর শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।বুধবার রায়ের পর মিন্নিসহ ছয় আসামিকে বরগুনা জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনা কারাগার থেকে মিন্নি তার বাবার সঙ্গে কথা বলে কান্নাকাটি করেছে বলে জানা গেছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে জেল সুপার বলেন, এ মুহূর্তে বরগুনার কারাগারে নারী বন্দিদের মধ্যে একমাত্র মিন্নিই কনডেম সেলে রয়েছে।

সকাল ৯টায় তার বাবার সঙ্গে কথা বলেছে,মিন্নি যখন কথা বলেছে তখন ফোনের কাছে আমাদের একজন ডিউটি করেন।তিনি বলেছেন মিন্নি কোনো কান্নাকাটি করেনি।সকাল ১০টার সময় অন্য পাঁচজন ফাঁসির আসামিও ফোনে কথা বলেছে।তিনি বলেন,মিন্নি ব্যতীত বরগুনার কারাগারের কনডেম সেলে এখন অন্য কোনো নারীবন্দি নেই।এছাড়াও রিফাত হত্যা মামলার অপর পাঁচজন দণ্ডপ্রাপ্ত পুরুষ আসামিকেও কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।এই পাঁচজন ছাড়া বরগুনার কারাগারের কনডেম সেলে অন্য কোনো বন্দিও নেই।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন,বুধবার মিন্নিসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তাদের বরগুনা কারাগারে নেয়া হয়েছে।সেখানে তাদের কনডেম সেলে রাখা হয়।তিনি বলেন, সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে মিন্নি আমার ও আমার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছে।সে খুব কান্নাকাটি করেছে। কারাগারে মিন্নি ভালো নেই।তাকে একা একটি নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে।মিন্নির বাবা দাবি করেন, আমার মেয়ে নির্দোষ।একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে তার মেয়েকে এ মামলায় ফাঁসিয়েছে।একটি প্রভাবশালী মহলকে আড়াল করার জন্যই এটা করা হয়েছে।আমি রায়ের কপি পাওয়ার আবেদন করেছি।এটি হাতে পেলে উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।আমি আশাবাদী আমার মেয়ে উচ্চ আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হবে।

শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী,আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।এ মামলায় চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।রায় ঘোষণার পর বুধবার বিকাল ৩টার দিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নি ছাড়া অন্য পাঁচজনকে প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নেয়া হয়।প্রিজনভ্যানে তোলার সময় মামলার আসামি রিফাত ফরাজী,আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন,মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত ও রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়কে হাসতে দেখা যায়।তবে হাসানকে কিছুটা মলিন দেখা গেছে।আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নিকে আলাদা একটি মাইক্রোবাসে কারাগারে নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ডের গড়া কিশোর গ্যাং বন্ড গ্রুপ।এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।২ জুলাই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড নিহত হন।রিফাত হত্যা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে দুটি ভাগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।এর মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১৪ জন শিশু আসামি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!