সেলিম উদ্দীন,কক্সবাজারঃ বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চালিয়ে গেলেও তা থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত রয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রত্যন্ত ইউনিয়ন পোকখালীর গোমাতলী গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে এই ইউনিয়নের অবস্থান।
লবণ ও মৎস্য ব্যবসার জন্য সমৃদ্ধ উপজেলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গোমাতলী।তবে এখানকার মানুষের ভোগান্তির আরেক নাম হচ্ছে ৪৯ বছরের পুরনো মাত্র দেড় কিলোমিটারের উত্তর গোমাতলী রাজঘাট আঞ্চলিক রাস্তাটি।প্রায় অর্ধ কিলোমিটার ইট বিছানো রাস্তাটি এখন পুরোপুরি কাঁদা-মাটির রাস্তা।মাঝে মধ্যে রাস্তাটির কোথাও কোথাও দু’একটি ইট কংকরের দেখা মেলে।দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবগত করলেও তাতে কোন সুফল হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,উত্তর গোমাতলী তথা গাইট্যাখালী থেকে রাজঘাট পাড়ায় যাওয়ার ওই আঞ্চলিক রাস্তাটি পুরো কাঁদা-মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে।চলতি বর্ষা মৌসুমে পুরো রাস্তাটি কাঁদা-পানিতে একাকার হয়ে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোন এক সময় রাস্তা ছিল।রাস্তার এই বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাস্তাটি ব্যবহার করে চলাচলকারী পোকখালী ইউনিয়নের উত্তর গোমাতলী ৭ নং ওয়ার্ডের রাজঘাট পাড়ার কয়েক হাজার বাসিন্দাদের।স্থানীয়রা জানিয়েছেন,৯০ দশকের দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এই রাস্তাটি নির্মাণ করে।
নির্মাণের কয়েক বছর পর থেকেই রাস্তাটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত কোন সংস্কার করা হয়নি।অথচ রাস্তাটি ব্যবহার করেই স্থানীয়রা যাতায়াতের পাশাপাশি প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লবণ ও মৎস্য সম্পদ জেলার বিভিন্নস্থানে পরিবহনযোগে সরবরাহ করে আসছেন।সেক্ষেত্রে দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরেই প্রতিনিয়ত তাদের পোহাতে হচ্ছে অন্তহীন ভোগান্তি।
তাছাড়া রাস্তার এই দুরাবস্থার কারণে আশপাশের গ্রামগুলোর সাথে যোগাযোগ প্রায় বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কিন্তু এ দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। তাই দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হুদা জানিয়েছেন, সম্প্রতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দীর্ঘদিনের চলাচল অযোগ্য রাস্তাটি দেখে হতবাক হয়ে যান। এরপরই তিনি নিজেই রাস্তাটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কক্সবাজার সদর প্রকৌশলীর নিকট তাগিদ দেন।তবে এখনও পর্যন্ত এলজিইডি কৃর্তপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ জানান,‘দীর্ঘ প্রায় চল্লিশ বছর আগে নির্মিত ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় এলজিইডি দফতরে বহুবার বলা হলেও কোন সুফল হয়নি।গত চল্লিশ বছরে পোকখালীতে অনেক পরিবর্তন হলেও এখনও অপরিবর্তিত দুর্দশার রাস্তাটি।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ বছর ধরেই চলাচলের অযোগ্য বলে শুনেছি। দ্রুত সংস্কারের জন্য চেষ্টা চলছে।