রিয়াদুল মামুন সোহাগঃ ধর্ষনের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়ায় মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা- আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন-আমাসুফ।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের এই খসড়াটির চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলে এর প্রতিক্রিয়াস্বরুপ এমন মন্তব্য করেন আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক উজ্জল হোসেন মুরাদ।এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন যেহেতু এটি খুবই প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় এবং যেহেতু বর্তমানে সংসদ অধিবেশন চলমান নেই, সেহেতু এটি ভেটিংয়ের পরে মহামান্য রাষ্ট্র্রপতির মাধ্যমে অধ্যাদেশে জারি করে দ্রæত আইনে পরিনত করা দরকার।
কী কারনে সারাদেশে অস্বাভাবিকভাবে ধর্ষনের ঘটনা ঘটছে তা জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক বলেন আমার ব্যক্তিগত মতে,দেশে বিচারহীনতা,ধর্মীয় ও পারিবারিক শিক্ষার অভাব, নৈতিক শিক্ষার অভাব,হয়রানীর উদ্দেশ্যে ধর্ষন ও শ্রীলতাহানীর মিথ্যে অভিযোগের মাধ্যমে প্রশাসনের মানষিকতা নষ্ট করা,মিথ্যে অভিযোগ ও মামলায় বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করা,ভারতীয় ও পশ্চিমা সাংস্কৃতির প্রভাব,অকালপক্বতা,অসহজতর বিয়ে ব্যবস্থাপনা,আধুনিকতার নামে অশালিন পোশাক পরিচ্ছেদ পরিধান,দূর্বল আইন সহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে ধর্ষনের মত হীন কর্মকান্ড ঘটিত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলে ধর্ষন প্রতিরোধে সংশোধীত আইনটি বাস্তবিক অর্থে প্রয়োগ এবং এর বিরুদ্ধে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি অনুস্বরন করতে হবে।তবেই কেউ ধর্ষনের মত এমন হীন কাজ করতে সাহস পাবেনা।এছাড়া সন্তানদের ধর্মীয় ও পারিবারিক সু-শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিক অবক্ষয় প্রতিরোধে পিতা-মাতাদের ভ‚মিকা রাখার আহব্বান জানান, যার ফলে প্রতিটি সন্তান নারী ধর্ষক না হয়ে নারী রক্ষক হওয়ার মানষিকতা তৈরি হবে।
সম্প্রতি অস্বাভাবিক ধর্ষনের ঘটনায় সংস্থার ভূমিকা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে, জাতীয়ভাবে আমরা বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদলিপি প্রেরন করেছি।এছাড়া সাড়াদেশে আমাদের সংস্থার ব্যানারে ‘‘ধর্ষন ও নারী নির্যাতন রোধে সুনাগরিকের করনীয়’’ শীর্ষক কর্মসূচী স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করার উদ্যোগ গ্রহন করেছি।ধর্ষন প্রতিরোধে স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে আমাসুফের প্রতিবাদ কর্মসূচী চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা,সিলেটের এম.সি কলেজের ছাত্রাবাসে নববধুকে গনধর্ষনসহ ধর্ষনের অসংখ্য ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরেই ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে দেশের বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।এরই ধারাবহিকতায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যদন্ড করার দাবীতে রাজপথে নামে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন,রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী,মানবাধিকার সংস্থা,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার মন্ত্রিসভার এক ভাচূয়াল মিটিংয়ে আইনটি সংশোধনের জন্য নীতিগত অনুমোদন হয়।