
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে দিন,দিন হয়ে উঠছে ইয়াবা সেবনকারী ও ইয়াবা বিক্রেতা।মাঝে মধ্যে দুই-এক জন গ্রেপ্তার হলেও দুই দিনের মাথায় বেরিয়ে এসে শুরু করে এই মরণ নেশার ব্যবসা।সন্দ্বীপের চাঁরপাশে খোলা চাউলের মতো বিক্রি হচ্ছে এই মরণ নেশা ইয়াবা।
কোন শ্রেণী পেশার মানুষ সেবন করছে এই মরণনেশা ইয়াবা,কারা বিক্রি করছে এই ভয়ংকর মাদক ইয়াবা,কিভাবে আসে এই ঘাতক ট্যাবলেট সন্দ্বীপে সেই বিষয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই।
সদ্বীপে চলছে জমজমাট ইয়াবার বাজার।নতুন প্রজন্ম রীতিমতো ইয়াবার প্রেমে উন্মাদ।মাদকের বাজারে কেনাবেচার শীর্ষে রয়েছে সর্ব গ্রাসী ইয়াবা।
সন্দ্বীপের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলেও ইয়াবার অভিন্ন আস্তানা গজিয়ে উঠছে।মাদকটি আকারে ছোট হওয়ায় সহজে বহন করা যায়।এ কারণে অন্য মাদকের তুলনায় ইয়াবা সেবনকারী ও বিক্রেতারা খুব সহজে নিরাপদে সেবন ও বিক্রি করতে পারে।যারা ইয়াবা সেবন করে তারাই বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
আইনের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য সাংকেতিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাবা’ ও গুটি।এ ছাড়া ও সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় এটিকে নানা নামে ডাকা হয়।অনেকে আবার স্রেফ কৌতূহলের বশেও দু-একবার ইয়াবা সেবন করে স্থায়ীভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
মহামারী রূপ নিয়েছে সর্বনাশা ইয়াবা।সন্দ্বীপের অলি-গলি থেকে শুরু করে গ্রামের আনাচে-কানাচে পর্যন্ত বিস্তার ঘটেছে নীরব এই ঘাতক ইয়াবা ট্যাবলেটের। ইয়াবায় সম্পৃক্ততা মিলছে সরকারি চাকরিজীবী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী,তরুণ-তরুণী,ব্যবসায়ী,চাকরিজীবীদের অনেকেই এখন ইয়াবায় আসক্ত।তবে এদের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী তরুণের সংখ্যাই বেশি।ইয়াবার ভয়াবহ ধোঁয়া আগামী প্রজন্মকে আজ ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
এ অবস্থায় আগামীতে সোনার এই সন্দ্বীপে ভয়াবহতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন নিয়ে প্রসাশন যেমন উদ্বিগ্ন,তেমন চিন্তিত সমাজের সচেতন মহল ও অভিভাবক গণ।সন্দ্বীপে সর্বত্র মহামারীরূপে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা মাদক ইয়াবা।ইয়াবা সেবীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।প্রতিদিন সন্দ্বীপের নৌ-পথে গুপ্তছড়া ঘাট ও বাঁশবাড়িয়া ঘাট দিয়ে বিভিন্ন উপায় ও নানা ধরনের কৌশলে ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে সন্দ্বীপে।
চট্রগ্রাম শহর সহ সন্দ্বীপের,গ্রামগঞ্জে এখন ইয়াবার জমজমাট ব্যবসা প্রসারিত।মধ্যবিত্ত তরুণ-তরুণীরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রধান টার্গেট৷সন্দ্বীপ বড় একটি অংশ হলো ইয়াবা ট্যাবলেটে আসক্ত৷আর আসক্তরা তরুণ এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যই বেশি।
নাম-পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদক ব্যবসায়ী জানান মিয়ানমারের ৬০ টাকার এই ট্যাবলেট পাচার হয়ে চট্রগ্রাম সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি মূলে ৮০-১০০ টাকায়।চট্টগ্রামে বড়,বড় মাদক কারবারীদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ১২০টাকায় কিনে নিয়ে সন্দ্বীপে এই ইয়াবা ট্যাবলেট ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় প্রতি পিস বিক্রি করা হয়।
ইয়াবা বিক্রি অনেক লাভ জনক হওয়ায় এটি সন্দ্বীপে এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।আর এ কারণে পেশা পরিবর্তন করে মাদক ব্যবসায় ঝুঁকছে অনেক মানুষ। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ,রাজনৈতিক নেতা ও সমাজ রক্ষাকারী নামের কতিপয় সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।কোন মাদক ব্যবসায়ী যদি মাদক নিয়ে গ্রেপ্তার হয় তাহলে কোন এক অদৃশ্য কারণে দুই থেকে তিন দিনের মাথায় বেরিয়ে চলে আসে আবার এই জগতে। এ কারণেই কোনোভাবেই এর আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না সন্দ্বীপ থেকে,ঠেকানো যাচ্ছে না ইয়াবার ব্যবসা।
সন্দ্বীপের সমাজ সেবক ও সচেতন মহলের এক ব্যক্তি বলেছেন,এখন সন্দ্বীপের স্থানীয় ব্যক্তিদের থেকে ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন কাজের সুবাধে সন্দ্বীপ আসতে বাইরে থেকে নিয়ে আসে ইয়াবা ট্যাবলেট।কারণ সন্দ্বীপে এর সেবনকারীর চাহিদা বেশি থাকায় এই মাদক ব্যবসা লাভ জনক বলে তারা সন্দ্বীপে ছড়িয়ে দিচ্ছে ইয়াবা।মাদকসেবীদের অধিকাংশই ইয়াবা আসক্ত।মাদকসেবীরা ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছে বিপুল অংকের টাকা।পরিবহন ও সেবন সহজ হওয়ায় দ্রুত এর থাবা বিস্তৃত হচ্ছে ৷
ইয়াবা পরিবহণ ও সেবন সহজ,আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়ানো যায়৷তাই এর চোরাচালান বাড়ছে,বাড়ছে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যাও।ইয়াবার সর্বনাশা থাবায় হাজারও পরিবারের সন্তানদের জীবন এখন বিপন্ন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক ব্যবসার এই সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই ইয়াবার ভয়াবহতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সন্দ্বীপের দায়িত্বশীল ও সচেতন মহলকে রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে।
এই বিষয়ে সচেতন মহলের লোকজন বলছেন,এখন যদি লাগাম টেনে না ধরা হয় তাহলে সন্দ্বীপের অনেক ছেলেরা নষ্ট হয়ে যাবে।প্রশাসনের উচিত ইয়াবা ব্যবসার দিকে বেশি নজর দেওয়া।
ধারাবাহিক অনুসন্ধানের দ্বিতীয় পর্বে থাকছে ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম-পরিচয়।তথ্য সহ ইয়াবা বিক্রেতা কারা তাদের পরিচয়।