মিরসরাইয়ে মুজিব বর্ষে পুলিশ কর্তৃক সাফিয়া খাতুন পেলো নতুন ঘর।

0 ২০০,২১১

মিরসরাই উপজেলার এক হত দরিদ্র খেটে খাওয়া নারী সাফিয়া খাতুন (৪৫), স্বামী- আজিজুল হক, সাং- দক্ষিণ তালবাড়িয়া, ৩নং ওয়ার্ড, মিরসরাই পৌরসভা। অভাবের সংসারে গৃহহারা সাফিয়া খাতুন (৪৫) গৃহহীন অবস্থায় পরিবার নিয়ে দুঃখদুর্দশায় দিন কাটছিলো।
মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশের কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনায় বাংলাদেশ পুলিশ দেশের প্রতিটি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ কর্মসূচির আওতায় মিরসরাই থানায় গৃহহীন সাফিয়া খাতুন (৫৪) কে একটি জমিসহ বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (১০ এপ্রিল ) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব গৃহ হস্তান্তর এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি মিরসরাই থানায় উপস্থিত ছিলেন, মিরসরাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলা উদ্দিন, মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) অলি উল্লাহ, সাংবাদিক নুরুল আলম, বিপুল দাশ, মোঃ ইউসুফ, নাছির উদ্দিন, কামরুল হাসানসহ থানার পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা।

মিরসরাই থানা সুত্রে জানা গেছে, এ বাড়ির আয়তন ৪১৫ বর্গফুট এবং এসব বাড়ি নির্মাণে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মিত বাড়িটিতে মোট ৩টি কক্ষ রয়েছে।

অফিসার ইনচার্জ ওসি কবির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে গৃহনির্মাণের সরঞ্জাম খরচ প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় ভাবে শ্রী আশীষ কুমার চৌধুরী ঘরের জন্য ভূমি দান করেন। সে ভুমিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির আবাসন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে ।মিরসরাই থানা পুলিশ কর্তৃক উপহারের বাড়িতে অসহায় সাফিয়া খাতুন (৪৫) কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানোর পর ৩টি প্রার্থীর নাম যাচাই বাছাই করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই পরিবারকে নির্বাচন করা হয়েছে ।প্রকল্পের আওতায় বাড়ি নির্মাণের জন্য আরকিটেকচার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। নির্মাণ কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট গৃহহীন পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে । পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স হতে সার্বক্ষণিক এসব বাড়ির নির্মাণ কাজ তদারকি করা হয়।

প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। ৪১৫ বর্গফুট আয়তনের বাড়ির দেয়াল নির্মাণে প্রিকাস্ট লাইট ওয়েট ফোম কংক্রিট ব্লক, আরসিসি পিলার এবং ছাদের জন্য স্থানীয়ভাবে তৈরি স্যান্ডউইচ প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে একটি স্টিলের দরজা, ২টি পিভিসি দরজা এবং ৩টি করে স্টিলের জানালা রয়েছে। প্রিকাস্ট লাইট ওয়েট ফোম কংক্রিট ব্লক ব্যবহার হয়েছে দেয়াল নির্মাণে। ইটের বিকল্প ফোম কংক্রিট ব্লক ব্যবহার হয়েছে, যা পরিবেশবান্ধব।

ব্লকের আয়তন বড় হওয়ায় নির্মাণ সময় এবং খরচ সাশ্রয় হয়। যেকোনও স্থানে পরিবহন করে সহজে জরুরি সময়ে এটি নির্মাণ করা সম্ভব। আরসিসি পিলার এবং বিম ব্যবহার করা হয়েছে, বিধায় এগুলো টেকসই এবং আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। হিট প্রুফ অর্থাৎ গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হবে।

নির্মাণ সামগ্রীর বিশেষত্বের কারণে বাড়িসমূহ সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধক ও ফায়ার রেজিস্টেন্ট। বাড়ি তৈরিতে যে ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে বাড়ি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাড়িটি বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলোজি কর্তৃক অনুমোদিত।

নিজের বাড়ি পেয়ে অনূভুতি জানান সাফিয়া খাতুন (৪৫)। সে বলেন,আমার ছেলে মেয়ে পরিবার নিযে এতোদিন গৃহহীন অবস্থায় অরক্ষিত জীবনযাপন করেছি। এখন আমি একটি সুন্দর বাড়ি পেয়ে নিরাপদে বাঁচতে পারবো। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য দোয়া করবো। সবাই যেন ভালো থাকেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!