জালাল উদ্দিন,উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধি: উখিয়ায় ফের ভয়াবহ যানজটে বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে স্থানীয়দের মাঝে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক প্রসস্থকরণ হচ্ছে। রাস্তা প্রসস্থ হওয়ায় দুপাশ দখলে নিয়ে গাড়ি পার্কিং ও মেরামতের কাজ করায় ভুগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। উখিয়া সদর ষ্টেশনের দুই পাশে সিএনজির লম্বা লাইন এমন কি উখিয়া থানার প্রবেশ মুখের রাস্তাও দখলে রাখে। তাছাড়া উখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সী লাইন, কক্স লাইন দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী ওঠানামার ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। মরিচ্যা, কোটবাজার, কুতুপালং, বালুখালী পানবাজার ও থাইংখালী ষ্টেশনের চিত্রও একই অবস্থা। মানবতার শহর উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসা-যাওয়া করেন এনজিওর শত শত গাড়ি। লাখ লাখ রোহিঙ্গার আবাসস্থল কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে রাস্তার দু,ধারে পন্যবাহি ট্রাক থেকে পন্য ওঠা-নামার ফলেও যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ শহিদ এটিএম জাফর আলম সড়ক দিয়ে প্রায় এগারো লাখের চেয়েও বেশি রোহিঙ্গার খাবার ও নিত্যপন্যসামগ্রী আনা-নেওয়া করে। ভারি যানবাহন চলাচলে সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কর্তৃপক্ষ সী-লাইন, কক্স-লাইন ও সিএনজি এবং টমটম গাড়ির স্টেশন রাস্তার ওপর থেকে সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এখানে বিনা বাধায় দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। সর্বত্র অবাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে টমটম। কুতুপালং হতে থাইংখালী পর্যন্ত অধিকাংশ টমটম চালক রোহিঙ্গা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তারা ট্রাফিক নিয়ম বুঝে না। এসব যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। চলছে চাঁদাবাজির উৎসব। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। স্থানীয়দের অভিযোগ এসব অবৈধ পরিবহন চলাচল রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা নেই। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে উখিয়াবাসি বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী সাধারণ যানজটে ভোগলেও করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল। বর্তমানে আবার তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যেখানে সেখানে অবৈধ পার্কিং, সড়ক দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ড, দিনে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সড়কের এই নৈরাজ্য দমনে জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেই। এত নিত্যদিন চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে উখিয়াবাসী। স্থানীয়রা জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি ভাবে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাঞ্জা থাকায় গত কয়েক মাস সড়কে নৈরাজ্য ছিল না। বর্তমানে যানবাহন চলাচলে সরকারি ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানার বিধি থাকলেও এসব পরিবহন কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। কোনো নজরদারী না থাকায় যাত্রীদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্য বিধি মানার মন মানসিকতা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি থাকা সত্বেও যাত্রীরা গাদাগাদি করেই চলাচল করছে। ফলে দেখা দিয়েছে সেই আগের চিত্র। অভিযোগ উঠেছে, পরিস্থিতি বদলে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা বদলায়নি। গত ২৭ সেপ্টেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালনে বালুখালী কাস্টমস সংলগ্ন এলাকায় যান উখিয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার। তিনি বলেন, আমি মোটর সাইকেলে করে ধীর গতিতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ টমটম আমাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ফলে আমি গুরুতর আহতবস্থায় কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। তিনি সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন। রাজাপালং এলাকার শেখ পরিবারের রাকিব জানান, উখিয়া হতে বাড়ি ফেরার পথে টমটমে সড়ক দুর্ঘটনায় আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমি সড়ক থেকে টমটম তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।