র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইসহাক ০৬ বছর পর আটক।

0 ১০,৯১৫
গত ০৫ মার্চ ২০১৬ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ১৯১৫ ঘটিকায় প্রবাসীর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার (৩৬) এর বাসায় তার ছেলেকে পড়ানোর জন্য গৃহ শিক্ষক আসে। ঐদিন রাত আনুমানিক ২১১৫ ঘটিকার সময় গৃহ শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানো শেষে বাসা থেকে যাওয়ার সময় ভিকটিমের ছেলে শিক্ষককে দরজায় বিদায় দিতে গিয়ে বিল্ডিং এর ৪র্থ তলায় সিঁড়িতে মাথায় ক্যাপ পরিহিত একজন অপরিচিত লোক দেখে সে ভয়ে বাসার ভিতরে ঢুকে পড়ে। ভিকটিমের ছেলে বাসায় ঢুকার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ০৪ জন লোক বাসায় প্রবেশ করে ভিকটিম ও তার ছেলেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতঃ আলমিরার চাবি দিতে বললে ভিকটিম পারভিন আক্তার চাবি না দিয়ে চিৎকার করার চেষ্ঠা করলে আসামীরা তখন ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে খাটিয়া হতে ফ্লোরে ফেলে দেয় এবং তার হাত, পা শাড়ির কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে এবং পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম পারভিন আক্তার (৩৬) কে তাহার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে বাসা থেকে স্বর্ণলংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়।
পরবর্তীতে বাদীর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার (৩৬) কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিম পারভিন আক্তার এর স্বামী মোঃ নুরুল আলম(৪৫) বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার নং-১০ তারিখ-০৭ মার্চ ২০১৬ ইং ধারা-৩৯৪/৩০২/৪১১/৩৪ পেনাল কোড।
উল্লেখ্য যে, ভিকটিম পারভিন আক্তার এর স্বামী মোঃ নুুরুল আলম ও তাহার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের যৌথ মালিকানায় বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন রৌফাবাদস্থ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে ৬ষ্ঠ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ে মামলার ১নং আসামী মোঃ ইয়াছিন দারোয়ান হিসাবে নিয়োজিত ছিল। ইয়াছিন মোঃ নুরুল আলমের দুসম্পর্কের ভাগ্নীও বটে। মোঃ নুুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর আবুধাবীতে ব্যবসা করেন। আব্দুস শুক্কুর স্ব উদ্যেগে ইয়াসিনকে বিদেশ নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুস শুক্কুরের সাথে আসামী ইয়াসিনের মনোমালিন্য হলে ইয়াসিন দেশে চলে আসে এবং মোঃ নুুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর এর উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনার কারনে আসামী ইয়াসিন মোঃ নুরুল আলম এবং তার বড় ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য তার বন্ধু মোঃ মনসুর(২৫) এর সাথে পরিকল্পনা করে।
পরবর্তীতে তাদের পরিকল্পনা মতে তাদের অপর দুই সহযোগী মোঃ আবু তৈয়ব@রানা (২৪) এবং মোঃ ইসহাক (২৭) সহ গত ০৫ মার্চ ২০১৬ইং রাত আনুমানিক ২১১৫ ঘটিকায় মোঃ নুরুল আলম এর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার (৩৬) কে তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্য করে। উক্ত ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত আসামী ইয়াসিন, মনসুর এবং আবু তৈয়ব@রানা এর উপস্থিতিতে পলাতক আসামী ইসহাকসহ চার জনকে মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার পর হতে আসামী মোঃ ইসহাক সু-কৌশলে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ ০৬ বছর আত্নগোপন করে থাকে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার ৪নং এজাহারনামীয় মৃত্যদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ ইসহাক চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সুলতানপুর এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ ইসহাক (২৭), পিতা-মোঃ কামাল হোসেন, সাং-ফটিকা, থানা-হাটহাজারী, জেলা- চট্টগ্রামকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামী অকপটে স্বীকার করে যে, সে ভিকটিম পারভিন আক্তার কে হত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!