আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে চটগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় ১৭টি অস্থায়ী কোরবানী পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটার জন্য অস্থায়ী পশুর হাট প্রধান সড়ক থেকে ন্যুনতম ১০০ গজ দূরে বসানো ইজারার প্রধান শর্তে উল্লেখ থাকলেও নিয়ম ভঙ্গ করে পাঁচটি হাট বসেছে সন্দ্বীপ উপজেলার অন্যতম প্রধান সড়ক দেলোয়ার খাঁ সড়কের যানচলাচল বন্ধ করে।এতে করে সাধারন যাত্রীদের চরম ভোগান্তির পাশাপাশি গবাদিপশুর বর্জ্যের দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের বাতাস।
সরেজমিনে সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়,অনুমোদিত অস্থায়ী ১৭ টি পশুর হাটের মধ্যে পাঁচটি হাট-হক সাহেবের বাজার,ঘাট মাঝির হাট,এরশাদ মার্কেট,পন্ডিতের হাট ও বক্তারহাট প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বসেছে দেলোয়ার খাঁ সড়কের ওপর।হাট চলাকালীন সময়ে দেলোয়ার খাঁ সড়কে গাছের গুড়ি,ড্রাম ও বাঁশ ফেলে প্রতিবছরই বন্ধ করে দেওয়া হয় যানবাহন চলাচল।
গতকাল বিকেলে বাউরিয়া ইউনিয়নের এরশাদ মার্কেট অস্থায়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়,মার্কেটের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে দেলোয়ার খাঁ সড়কে ড্রাম,গাছের গুড়ি ফেলে ও বাঁশ বেঁধে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে সড়কের ওপর বসানো হয়েছে পশুর হাট।বুধবার গাছুয়া ইউনিয়নের হক সাহেবের বাজারে গিয়ে
দেখা যায়,দেলোয়ার খাঁ সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ও আড়াআড়ি বাঁশ বেঁধে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়ায় এসময় চরম ভোগান্তিতে পড়েন বাউরিয়া,গাছুয়া ও সন্তোষপুর ইউনিয়নগামী অসংখ্য মানুষ।
সন্তোষপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন বলেন, সন্দ্বীপ টাউন থেকে উত্তর সন্দ্বীপ যাওয়ার প্রধান সড়ক দেলোয়ার খাঁ।এই সড়ক বন্ধ করে প্রতিবছর বিভিন্ন জায়গায় চারটি হাট বসে।চলে এক সপ্তাহ ধরে।সড়ক বন্ধ করে হাট বসানোর কারণে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না।বেশী ভোগান্তিতে পড়েন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগামী রোগী,শিশু ও বৃদ্ধরা।
মঙ্গলবার বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়নের পন্ডিতের হাটে গিয়ে দেখা যায়,সড়কের ১ কিলোমিটার জুড়ে সড়কের ওপরেই বসানো হয়েছে পশুর হাট।
পন্ডিতের হাটের ইজারাদার আকবর হোসেন বলেন, প্রশাসনের সাথে কথা কথা হয়েছে।গরু হাটের নির্ধারিত জায়গার বাইরে রোডে আসলেও সমস্যা হবে না।
মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা এমদাদ হোসেন বলেন, দক্ষিণ সন্দ্বীপের চারটি ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা সদরে যাওয়ার জন্য দেলোয়ার খাঁ সড়ক ব্যবহার করে। প্রতি বছর পন্ডিতের হাটে সড়ক বন্ধ করে সড়কের উপর গরুর হাট বসানো হয়।মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না।
সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ঘাট মাঝিরহাটের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন সন্দ্বীপী বলেন,প্রতিবছরই ঘাট মাঝিরহাট ও হক সাহেবের বাজারে রাস্তা বন্ধ করে রাস্তার উপর পশুর হাট বসানো হয়।অথচ পাশেই গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও গাছুয়া এ কে একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠ রয়েছে।
দেলোয়ার খাঁ সড়ক বন্ধ করে পশুর হাট বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে হক সাহেবের বাজার অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারাদার রিয়াজ মাহমুদ জিহাদ বলেন, হাট আমার নামে হলেও পরিচালনা করছেন গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোরবানী উপলক্ষে ইজারা দেওয়া ১৭ টি অস্থায়ী হাটে ৯ জুন থেকে শুরু হওয় বেচাকেনা চলবে ১৬ জুলাই পর্যন্ত।দেলোয়ার খাঁ সড়কের উত্তর অংশের ৪টি হাটের মতোই দেলোয়ার খাঁ সড়কের দক্ষিণ অংশে পন্ডিতের হাটও বসেছে দেলোয়ার খাঁ সড়কের উপর।
সড়ক বন্ধ করে পশুর হাট বসানোর বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন,সড়ক বন্ধ করার তো প্রশ্নই ওঠে না,প্রধান সড়ক থেকে ১০০ গজ দূরে পশুর হাট বসাতে হবে।যেসব জায়গায় সড়ক বন্ধ করে পশুর হাট বসানো হয়েছে সেখানে ফোর্স পাঠিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।