ইলিয়াস কামাল বাবু,সন্দ্বীপ প্রতিনিধিঃ সন্দ্বীপে সদ্য প্রতিষ্ঠিত ” স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ” এর মূল শ্লোগানই হলো- ” স্বাস্থ্য সেবাই অঙ্গীকার “। আর এ শ্লোগান কে সামনে রেখে গত ৫ অক্টোবর, সীমিত আকারে বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। আজ তার ৫৫ তম দিন। এ উপলক্ষে সোমবার, বিকেল ৪ টায় স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার কনফারেন্স রুমে সন্দ্বীপের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদকর্মীদের সাথে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করে – হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ সাংবাদিক পরিষদ ও সন্দ্বীপ অনলাইন প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দগন উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালের কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান হাসপাতালের কার্যক্রম, সেবা ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সবিস্তারে তার লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সন্দ্বীপে স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালের স্বপ্নদ্রষ্টা দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, ইয়ুথ গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মরহুম ফিরোজ আলম কে অত্যান্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। পাশাপাশি প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ও অত্যাধুনিক সরঞ্জমাদি সমৃদ্ধ এ হাসপাতালের চেয়ারম্যান দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি রেজ্জাকুল হায়দার মঞ্জু কেও বিনয়ের সাথে স্মরণ করেন। হাসপাতালের কো-অর্ডনেটর মিজানুর রহমান বলেন- সন্দ্বীপের চার লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরনে স্বর্ণদ্বীপ হাসপাতাল অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাই এটিকে গরীবের হাসপাতালও বলা চলে। স্বর্ণদ্বীপ হাসপাতালে এসে পয়সার অভাবে কেউ বিনা চিকিৎসায় ফেরৎ যাবে না। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- হাসপাতালের ম্যানেজার (এডমিন) আকবর হোসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন- গত ৫ অক্টোবর বহিঃর্বিভাগ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর ডিসেম্বরের প্রথম কী দ্বিতীয় সপ্তাহে হাসপাতালের ইনডোর কার্যক্রম চালু করার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তা হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে অপেরেশন থিয়েটার সচল হবে,থাকবে এনেস্থিসিয়ান। বিশেষ করে প্রসূতি মায়েদের ডেলিভারি অপারেশনের আর কোনো ঝামেলাই থাকবে না। আছে সর্বাধুনিক আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন সহ ফিজিওথেরাপি বিভাগ,ডেন্টাল সাইড, প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষা- নিরীক্ষার জন্য রয়েছে আধুনিক মান সম্মত পরীক্ষাগার, আছে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান, ইতিমধ্যেই হাসপাতালে দু ‘ জন অভীজ্ঞ গাইনী ডাক্তার সহ মোট ৮ জন ডাক্তার রয়েছেন। হাসপকতালের প্রথম তলায় রয়েছে- ২৪ ঘন্টা ইমারজেন্সী চিকিৎসা ব্যবস্থা,ডেন্টাল ইউনিট,ল্যাব,আল্ট্রা,ইসিজি, দ্বিতীয় তলায় রয়েছে-পুরষ ও মহিলা ওয়ার্ড, ওটি রুম, ওটি অবজারবেশন,কনফারেন্স রুম, হিসাব রক্ষন বিভাগ। তৃতীয় তলায় রয়েছে- লেবার রুম,পুরুষ ওয়ার্ড,নামাজের স্থান,ফিজিওথেরাপি বিভাগ,কেবিন,নার্সদের আবাসন। চতুর্থ তলায় রয়েছে- ডাক্তারদের আবাসন, এই ভাবেই সাজিয়েছে স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। সবচে বড় কথা হলো রোগীদের দ্রুত ওঠা-নামার জন্য সন্দ্বীপের ইতিহাসে এই প্রথম লিফটের ব্যাবস্থা। সর্বমোট ৬৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে এ হাসপাতালে। এক প্রশ্নের জবাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালেন এ পর্যন্ত আউটডোরে প্রায় ৩০০০ রোগী সেবা নিয়েছে, নরমাল ডেলিভারী হয়েছে ২১ জনের। হাসপাতালের কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান আরো জানালেন- আমাদের স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতারা তাদের যাকাতের অর্থেই এটি নির্মান করেছে সন্দ্বীপবাসীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে, কোনো মুনাফা করতে নয়। তাই এ হাসপাতাল সকল সন্দ্বীপবাসীর, এ হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্বিক পরিচালনায় তিনি সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।