আখাউড়ায় নাতির দায়ের কুপে দাদীর মৃত্যু

0 ১৬৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নাতির দায়ের কুপে দাদী জোহরা খাতুন (৮০) এর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুর ২টার দিকে আখাউড়া পৌরশহরের ( ৭ ) নং ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায় এঘটনা ঘটে। নিহত জোহরা খাতুন শান্তিনগরের মৃত রশিদ খাঁর স্ত্রী। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো নিহতের দেবর শান্তিনগরের বজলু খাঁ (৭০), বজলু খার ছেলে ফজল খাঁ (৪০) ও বজলু খার মেয়ে বিলকিছ বেগম (৩৫)।

এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শান্তিগরের দুই ভাই রশিদ খাঁ ও বজলু খাঁর মধ্যে বাড়ির ( ৯ ) শতক জায়াগ নিয়ে ( ৩৬ ) বছর ধরে বিরোধ চলছিল। ( ৬ ) বছর আগে রশিদ খাঁ আদালতের মাধ্যমে রায় পেয়ে ওই ভূমিতে সীমানা দেওয়াল নির্মাণ করে। কিন্তু বজলু খাঁ ও তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। এনিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। আজ রোববার সকালে বজলু খাঁ ও তার ছেলেরা জোর পূর্বক রশিদ খাঁর ৬ বছর আগের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে। রশিদ খাঁর ছেলেরা দেওয়াল ভাঙার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে রশিদ খার ছেলেরা সেখান থকে চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরে ফজল খার ছেলে ইয়াছিন খাঁ (২০) ও মাছুম খা (৩০) রশিদ খার ঘরে ঢুকে জোহরা খাতুনের মাথায় দা দিয়ে কুপ দেয়।
তার ছেলে ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত জোহরা খাতুনের নাতি ফাহিম (১০) বলে, আমি উঠানে বসে ছিলাম। হঠাৎ দেখি ইয়াছিন ও মাছুম দা নিয়ে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দাদীকে মাথায় কুপ দিয়ে দা-টি ঘরের কাড়ের উপরে ফেলে চলে যায়। মাছুম ও ইয়াছিন সম্পর্কে জোহরা খাতুনের ভাতিজার ঘরের নাতি হয়। এ ব্যপারে জোহরা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর খাঁর ছেলে রনি খাঁ বলেন, তাদের একটি মামলায় হাজিরা দিতে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে যাই। দুপুরে এসে দেখি বজলু খাঁ ও তার ছেলেরা আমাদের দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলতেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদেরকে মারতে আসে। আমরা তখন সেখান থেকে চলে আসি।
এর পর বজলু খার নাতি ইয়াছিন আমাদের ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে আমার মাকে হত্যা করে। এ ব্যপারে জানতে চাইলে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক মেডিকেল অফিসার শ্যামল ভৌমিক বলেন, নিহতের মাথায় দায়ের কুপ ছিল। শরীরেও আঘাত ছিল। ব্রেইনে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে বজলু খাঁর ঘর তালাবদ্ধ থাকায় তাদের কারও কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যপারে কসবা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার নাহিদ হাসান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে পূর্ব বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঠানো হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!