উপজেলা সন্দ্বীপ ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রাসেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সন্দ্বীপবাসী।

0 ৭৯৭,৮৫৭

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রাসেলের বিরুদ্ধে সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার নাম করে লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন চরাঞ্চলের একাধিক ভুক্তভুগী কৃষকসহ গাছুয়া ইউনিয়নের পাঁচ জন ভুক্তভোগী।এছাড়া মিছ মামলায় পক্ষে রায় দেওয়ার অভিযোগ আছে শত শত সন্দ্বীপবাসীর।

ভুক্তভুগীরা জানান,উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেল আহম্মেদ একেক জনকে একেক পরিমাণ খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার কথা বলে কারো কাছ থেকে কড়া প্রতি আবার কারো কাছ থেকে একর প্রতি জায়গা দিবে বলে অর্থ হাতিয়েছেন।ভক্তভুগীদের মধ্যে বাউরিয়া ৫ নং ওয়ার্ড বেড়িবাঁধের মোহাম্মদ আজাদ বলেন,আমাকে ১০০ কড়া জায়গা দিবে বলে প্রতি কড়া ২ হাজার টাকা করে মোট ২লক্ষ টাকা চুক্তি করে।

আমি প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি।বাকি টাকা যোগাড় করে রাখার কথা বললে আমি যোগাড় ধার কর্জ করেছি।কিন্তু আমাদেরকে একটা আবেদনপত্র দিয়েই দায় সেরেছে সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেল আহম্মেদ।

আরেক ভুক্তভুগী একই ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হাশেম জানান,আমি ৪ নামে দেড় একর করে মোট ৬ একর জমির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছি সার্ভেয়ার রাসেলকে।কিন্তু আমাকে আমার দখলে থাকা এক একর জমি মৌখিকভাবে নির্ধারণ করে দিলেও সেটির কোন দলিল বা কাগজপত্র দেননি সার্ভেয়ার।দলিলের কথা বললে তিনি আমাদেরকে একটি আবেদন ধরিয়ে দিয়ে আর কোন উত্তর দিচ্ছে না।এই বিষয়ে প্রশ্ন করলেই তিনি বিভিন্নভাবে ধমক দেন।

ভুক্তভুগী আজাদ প্রতিবেদককে জানান,সরকার ভূমিহীন কৃষকদেরকে খাস জমি দিবে চাষ করে কৃষি উন্নয়নের জন্য কিন্তু সার্বেয়ার জমি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদেরকে সর্বশান্ত করছে।আমাদেরকে জমি না দিলে আমাদের থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিলে আমরা কর্জ করে নেয়া টাকা পরিশোধ করে ঋণমুক্ত হতে পারব।

এছাড়া গাছুয়া ইউনিয়নের আজাদ,হাশেম এবং পারভেজ অভিযোগ করে বলেন,আমাদের ৭৫ কড়া করে খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার নাম করে একেক জন থেকে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে চুক্তি করেন কিন্তু আমরা পঞ্চাশ হাজার টাকা করে দেড় লক্ষ দিলেও এখন আর আমাদের ফোন ধরেন না রাসেল।

এছাড়া মিছ মামলার রিপোর্ট পজিটিভ করতে অনেক টাকা দিতে হয় তাকে।টাকা না দিলে হয়তো মামলা খারিজ হয় নতুবা উল্টো রিপোর্ট দেন এই সার্ভেয়ার রাসেল।

রহমতপুর,কাছিয়াপাড়,মুছাপুর,দীর্ঘাপাড়,সন্তোষপুর,সারিকাইত,মাইটভাঙ্গা,গাছুয়া,আমানউল্লাহ,হরিশপুর,বাউরিয়াসহ প্রায় সকল ইউনিয়নে অনেকের মিছ মামলায় রিপোর্ট দিতে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই রাসেলের বিরুদ্ধে।

এছাড়া সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেল আহম্মেদের নামে দুদকে দুটি মামলা চলমান আছে বলে খবর পাওয়া গেছে।তিনি পূর্বের কর্মস্থলেও একইভাবে খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে ভূমি অফিস সুত্রে জানা যায়।

এই বিষয়ে,সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে বার বার মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।

সার্ভেয়ারের অনিয়মের ব্যাপারে সন্দ্বীপ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এসিল্যান্ড এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খিসার কাছে জানতে চাইলে তিনি মানবকণ্ঠকে বলেন,খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার সার্ভেয়ারের কোন এখতিয়ার নেই।ভুক্তভোগীদেকে সরাসরি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন।অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।সার্বেয়ারের সাথে কোন ধরনের অনৈতিক লেনদেন না করার অনুরোধ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সম্রাট খিসা।

উল্লেখ্য যে,গত দুই মাস আগেও ছিলো চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সন্দ্বীপ উপজেলা ভূমি অফিস নাম্বার ওয়ানে।সাবেক সন্দ্বীপ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)মোঃ মঈন উদ্দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে সন্দ্বীপ উপজেলা ভূমি অফিস ছিলো চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে প্রথম কিন্তু দুই একজন কর্মকর্তার কারণে সব বিলিন হতে বসেছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!