চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পরিবহন সংগঠনের নামে চলছে পার্কিং বাণিজ্য

0 ৫০৯,৮৯৯

কোনভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার এলাকার সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ পার্কিং-বাণিজ্য।একটি ‘পরিবহন সংগঠনের’ নামে চার সদস্যের একটি চক্রের নিয়ন্ত্রণে চলছে এই অবৈধ বাণিজ্য।

চালকদের অভিযোগ,চট্টগ্রাম অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন নামের একটি সংগঠনের নামে তাদের কাছ থেকে পার্কিংয়ের অজুহাতে চাঁদা নিচ্ছে।এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যাত্রীদের কাছ থেকে নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

অনদিকে সড়কের উপর অবৈধভাবে অটোরিকশা পার্কিংয়ের ফলে কালাবিবির দিঘির মোড় থেকে কর্ণফুলীর বড়উঠান এলাকা পর্যন্ত অসহনীয় যানজট হচ্ছে।যানজটের কবলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে শ্রমঘন্টা।

পেকুয়া লাইনের পার্কিং-এ গেলে জেবল হোসেন নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালক বলেন,এখানে পার্কিংয়ের জন্য আমরা ফোরকানকে ৭০ টাকা করে প্রতিদিন দিই।আর কারা নেয় এমন প্রশ্নে ওই চালক বলেন,ওদের একটা সিন্ডিকেট আছে,ওরা নেয়। আমাদের সিএনজি চালকদের কোন সংগঠন নেই। এদের চাঁদা না দিলে চাতরী চৌমুহনী এলাকায় গাড়ি দাঁড় করানো সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার(৮ সেপ্টেম্বর)বিকেলে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়,আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনী এলাকার গোল চত্বর ঘিরে চারপাশে সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্টেশন গড়ে উঠেছে।দক্ষিণ পাশে বরুমচড়া লাইনের পার্কিং স্পট নিয়ন্ত্রণ করে দিদারুল আলম।পূর্বপাশের পেকুয়া লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন ফোরকান।পশ্চিম পাশে বটতলী,১৫ নম্বরঘাট ও গহিরা লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন আলম।উত্তর পাশের শহরগামী সিএনজি অটোরিকশার লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন হাবিব।

চাতরী চৌমুহনী এলাকায় দেখা যায় আলম নামের এক ব্যক্তি সিএনজি অটোরিকশার চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছেন।কাছে গিয়ে জানতে চাইলে আলম বলেন,এটা আমাদের সংগঠনের চাঁদা।প্রতিদিন ২০ টাকা করে নিই।এটা প্রশাসন থেকে শুরু করে এলাকার সবাই জানে।আপনাদের কারণে আমরা কিছু করতে না পারলে কি চুরি করব?এসব বলে চলে যান।

বরুমছড়া লাইনে গেলে চাঁদা তোলার সময় কথিত লাইনম্যান এনামের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন,আমি দিদারের অধীনে চাকরি করি।আমার বস দিদার।আপনি দিদারের সঙ্গে কথা বলুন।

কথিত বস দিদারুল আলমকে ফোন দিলে তিনি বলেন, এখানে চট্টগ্রাম অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন নামে আমাদের সংগঠন আছে।সংগঠনের পক্ষ থেকে আমি দায়িত্ব পালন করি।আমাদের দক্ষিণ চট্টগ্রামের সভাপতি নুরুল আলম।আপনারা চাঁদাগুলো কি তাকে দেন- এমন প্রশ্নের জবাবে দিদার বলেন,না।লাইনের কাজে খরচ করি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের দক্ষিণ চট্টগ্রামের সভাপতি নুরুল আলম বলেন,চাতরী চৌমুহনী এলাকায় আমাদের সংগঠন আছে এটা ঠিক। সেখানে তিন-চারজনের একটা সিন্ডিকেট এসব লাইন চালায়। তারা আমাদের সদস্য।তবে সেখানে চাঁদাবাজিতে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাতরী চৌমুহনী বাজারের ট্রাফিক বক্সের ইনচার্জ হাফিজুল ইসলাম বলেন,এ রকম কোন বিষয়ে আমি জানি না।তবে এরকম হলে সিএনজি অটোরিকশাগুলোকে পার্কিং করতে দেব না।

এসব বিষয়ে আনোয়ারার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও সহকারী কমিশনার(ভূমি)আব্দুল্লাহ আল মুমিনকে অবগত করা হলে তিনি বলেন,চাতরী চৌমুহনী বাজারে যানজট নিরসনে অভিযান চালানোর সময় বিষয়টি আমারও মাথায় এসেছে।তখন মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি তুলে ধরে কর্তব্যরত টিআইকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলাম।চাঁদা আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!