জীবন ও জীবিকাকে সৃমুন্নত রেখে সেক্টরিয়াল লকডাউন করতে সরকারের প্রতি সুজনের আবেদন

0 ১৮৬

জীবন ও জীবিকাকে সমুন্নত রেখে সেক্টরিয়াল লকডাউন করতে সরকারের প্রতি বিনীত আবেদন জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ রবিবার (১৮ এপ্রিল ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আবেদন জানান। এ সময় তিনি বলেন, যেভাবে সারাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে লকডাউনের কোন বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে দেশের মানুষের জীবন রক্ষার্থে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে যে কার্যকরী উদ্যোগসমূহ গ্রহণ করেছেন তা বিশ^ব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ যেখানে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত সেখানে বাংলাদেশ এখনো যে আর্থিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তা একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কারণে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলে আমরা করোনাকে জয়ী করতে পারবো তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেক্টরিয়াল লকডাউন করতে পারলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যেতে পারে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সরকারি ঘোষণায় বাজার এবং বিভিন্ন ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পরিবহনকে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ ক্রেতা প্রতিদিনই বাজারে ভিড় করছে। দেখা যাচ্ছে যে কতিপয় ক্রেতা অহেতুক বাজারে যাচ্ছে। এতে করে একদিকে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তাই নগরীর সমস্ত ছোট-বড় বাজারগুলোকে সাপ্তাহিক বাজারের আওতায় নিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন। যেখানে নগরীর প্রতিটি বাজার সপ্তাহে দুইদিন খোলা থাকবে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে সেখানে উভয় বেলা বিক্রয়ের সুবিধা থাকবে। বাজারগুলোতে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার জন্য আলাদা আলাদা রাস্তা থাকবে। বাজারে একবারে পঞ্চাশ জনের অধিক ক্রেতা প্রবেশ করতে পারবে না। বাকী ক্রেতাগণ বাজারের বাহিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অপেক্ষমান থাকবে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট সময় পাবে বাজার করার জন্য। ৩০ মিনিটের মধ্যে বাজার করে ঐ ক্রেতাকে বের হয়ে আসতে হবে। এতে করে প্রতিদিন বাজারে আসার প্রবণতা কমবে এবং সংক্রমণের মাত্রাও হ্রাস পাবে। বাজার কর্তৃপক্ষকে উপরোক্ত বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। অন্যদিকে গণপরিবহন কিংবা যে সমস্ত ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পরিবহন কর্মী এবং শ্রমিকদের আনা নেওয়া করছে তারা বেশীরভাগই সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও নেই এসব পরিবহণে। এছাড়া এক সিট খালি রেখে যাত্রী পরিবহনের কথা বলা হলেও প্রায় পরিবহনেই দুই সিটে যাত্রীসহ গাদাগাদি করে যাত্রী আনা নেওয়া করছে। এতে করে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। গণপরিবহনকে যে কোন মূল্যে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে নচেৎ সংত্রমণের মাত্রা বাড়তেই থাকবে। তিনি আরো বলেন রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। গতবছরও করোনা সংক্রমণের কারণে দোকানগুলোতে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম লেনদেন হয়েছে। সাধারণত রোজার ঈদে যেরকম ব্যবসা বাণিজ্য হয় সেটা গতবছর হয়নি। তারপরও সরকারের নানামূখী উদ্যোগের ফলে ব্যবসায়িরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিল। তাই ঈদ অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ১৫ রমজানের পর সপ্তাহে অন্তত তিনদিন সকাল ও রাতে উভয় শিফটে মার্কেট এবং শপিংমলগুলো সরকারি স্বাস্থবিধি মেনে খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। তবে একই এলাকায় পাশাপাশি দুটি মার্কেট কিংবা শপিংমল একসাথে খোলা থাকতে পারবে না। শপিংমলগুলোকে এলাকাভিত্তিক এবং সকাল বিকাল শিফটিং করে খোলা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে। ক্রেতারা দলবেঁধে মার্কেটে আসতে পারবে না। প্রতিটি পরিবার থেকে একজন মার্কেট কিংবা শপিংমলে আসবে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং এ ব্যাপারে কোন অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে আগে বেঁচে থাকতে হবে। বেঁচে না থাকলে ঈদের কাপড় দিয়ে কাফন পড়ানো যাবে না। এভাবে লকডাউন করলে জীবন ও জীবিকা চলবে এবং সংক্রমণও রোধ করা যাবে। এছাড়া শহরে কিংবা গ্রামে যেসব এলাকায় সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেসব এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে পূর্ণ লকডাউন ঘোষনা করার আহবান জানান তিনি। লকডাউন ঘোষণার আগে ঐসব এলাকার জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করার সুযোগ করে দিতে হবে যাতে কোন প্রকার মানবিক বিপর্যয় না হয়। এছাড়া লকডাউনকৃত এলাকার হতদরিদ্রদের সরকার প্রদত্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করারও আহবান জানান তিনি। এভাবে লকডাউন ব্যবস্থা পরিচালিত করলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জীবন ও জীবিকা সমুন্নত রেখে করোনা সংক্রমণও কমিয়ে আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!