ঢাকায় দূতাবাস স্থাপন করবে কেনিয়া

0 ৩০০,০৯২

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে ঢাকায় দূতাবাস স্থাপন করতে চায় আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে চুক্তি ও দুই শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই এবং আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী নাইরোবি।সোমবার(২৫ জুলাই)ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি(এফবিসিসিআই)কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করে ঢাকা সফররত কেনিয়ার প্রতিনিধিদল।সভায় এ আগ্রহের কথা জানান কেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপাক্ষিক ও রাজনীতিবিষয়ক মহাসচিব মই লেমোশিরা।

তিনি জানান, শিগগিরই ঢাকায় কেনিয়ার হাইকমিশন স্থাপন করা হবে। আকাশ পথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশ বিমান ও কেনিয়া এয়ারওয়েজের মধ্যে আলোচনা চলছে।মই লেমোশিরা বলেন,কেনিয়ায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ,মানবসম্পদ উন্নয়ন,স্বাস্থ্য খাত,আবাসন,তথ্য প্রযুক্তি ও শিল্প খাতে বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ সম্ভাবনা আছে।কেনিয়ায় বিনিয়োগের মাধ্যমে সমগ্র আফ্রিকার বাজারে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব।রাষ্ট্রদূত জানান,পররাষ্ট্রনীতিতে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল গ্রহণ করেছে নাইরোবি।সে কারণে কেনিয়ার কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার।

এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান,বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক,চামড়াজাত ও প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিকস,প্রক্রিয়াজাত সামুদ্রিক খাবার ও কৃষি পণ্য আমদানি করতে পারে কেনিয়া।এছাড়াও পর্যটন,তথ্য প্রযুক্তি,সমুদ্র অর্থনীতি ও কৃষি খাতে পারষ্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে।নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কেনিয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে।

আফ্রিকার ৫৪টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত মুক্ত বাণিজ্য এলাকা আফ্রিকান ইউনিয়ন,পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকান কমন মার্কেট(সিওএমইসিএ) এবং পূর্ব আফ্রিকান কমিউনিটির সদস্য কেনিয়া।এসব কারণে আফ্রিকায় বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরিতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

তিনি জানান,বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কেনিয়ায় পোশাক,বস্ত্র, ওষুধ, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশ ও কেনিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব করেন তিনি।সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।তিনি বলেন,ঢাকায় কেনিয়ার হাইকমিশন স্থাপন ও আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এর আগে কেনিয়ার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক স্টেলা মোকায়া ওরিনা জানান, দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ও কেনিয়ার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে এরইমধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে সম্পর্ক জোরদার করা হলে দুই দেশই লাভবান হবে।

সভায় এফবিসিসিআই’র পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর কেনিয়াতে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রেল অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।তিনি জানান,কেনিয়া সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশটির কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন তারা।কেনিয়াতে বাংলাদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশাল সম্ভাবনা আছে,জানিয়ে তা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান পরিচালক এস এম শফিউজ্জামান।

পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দিল্লিতে অবস্থিত কেনিয়ার হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার আইরিন ওলো,ট্রেড কাউন্সেলর জেয়ার্ড বি মাইয়্যেকা, এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হারুন,নাসের,এস এম জাহাঙ্গির আলম(মানিক),সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির,আবু হোসেন ভুঁইয়া(রানু) ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।সভা শেষে এফবিসিসিআই’র মুজিব কর্নার পরিদর্শন করে কেনিয়ার প্রতিনিধিদল।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!