দোকানের ক্যাশ বাক্সই চোরের টার্গেট,সন্দ্বীপে ৪ দিনের ব্যবধানে ১৬ দোকানে চুরি

0 ৬৮৮,০৪২

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে দোকানপাট ও বাড়িঘরে চুরি বন্ধ করতে পারছে না পুলিশ।চার দিনের ব্যবধানে গতকাল মঙ্গলবার দিবে গত রাতে উত্তর সন্দ্বীপের বানীর হাট বাজারের ১৬ টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

দোকানগুলোর মধ্যে সোনার দোকান, মুদি দোকান, ফার্মেসী রয়েছে।প্রতিটি দোকানের ঢুকে ক্যাশ বাক্স ভাঙচুর করে টাকা নিয়ে গেছে চোরের দল।

এর আগে গত শুক্রবার রাতেও উপজেলার শিবেরহাটে মমতা জুয়েলার্স নামে একটি সোনার দোকান ও পপুলার ফার্মেসী নামে অপর একটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। একই রাতে চোরেরা সন্দ্বীপ পৌরসভায় একটি বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে।
এ নিয়ে গত এক মাসে সন্দ্বীপে প্রায় ৫১ টি দোকান চুরির ঘটনা ঘটেছে।পুলিশ ধারাবাহিক চুরির ঘটনা বন্ধ করতে পারছে না।

পুলিশের ধারণা, রাতে দোকানপাটে চুরি করার পর চোরাই পণ্য, টাকা-পয়সা নিয়ে নৌপথ পাড়ি দিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় চলে যায় চোরের দল। চুরি ঠেকাতে না পেরে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সমন্বয়ে গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সন্দ্বীপেরর সঙ্গে যাতায়াতের সকল নৌপথে নজরদারি চালানোর কথা ভাবছে পুলিশ। পাশাপাশি স্থানীয় চোরগুলোকে ধরার জন্য উপজেলায় বিভিন্নস্থানে অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, চুরি ঠেকাতে তারা নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এবার জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ত করার চিন্তা ভাবনা চলছে পাশাপাশি সন্দ্বীপের যে কয়টি ঘাট আছে সেগুলোকে নজরদারীতে আনার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত একমাসে সন্দ্বীপে অন্তত ৩৮ টি দোকান, ঘর কিংবা প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দুটি ঘটনায় চুরির কিছু মালামাল পৌরসভার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হলেও ওই বাড়ির মালিক শিবলুকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। শিবলুর পুকুর থেকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা, একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা ও একটি ভ্যান উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কিছুদিন পর পর চুরির ঘটনা ঘটতে থাকায় গত বুধবার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সবাই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় চেয়ারম্যানেরা। তখন পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে

জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। পাশাপাশি সবগুলো বাজারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য বাজার কমিটিকে নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তটি নোটিশ আকারে বাজার কমিটিরকে পাঠানোর কথা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সম্রাট খীসা বলেন, তারা প্রতিটা বাজার কমিটির কাছে চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে। পাশাপাশি সবগুলো ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদেরকে তাদের গ্রাম পুলিশকে আরও সক্রিয় করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার বলেন, সন্দ্বীপে চুরির কিছু ঘটনা ঘটেছে। আবার কিছু ঘটনার মালামালুও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, তাদের ধারণা চোরের দল নদীপথে চোরাইকৃত পণ্যসহ টাকা পয়সা নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে পালিয়ে যায়। এজন্য সন্দ্বীপের চারপাশে যে ছয়টি নৌঘাট রয়েছে, সেগুলোতে রাত্রিকালীন চলাচলকারী নৌযানগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবছেন তারা। এজন্য কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশেরও সহায়তা চাওয়া হবে। নৌঘাট দিয়ে যাতে করে চুরি করা পণ্য নিয়ে নিরাপদে সন্দ্বীপ ত্যাগ করতে না পারে চোরের দল। পাশাপাশি ভূখন্ডে থাকা চোরদেরও ধরতে অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!