নিম্নমানের টাইলস দেখে নিজ হাতে ভাঙলেন মেয়র,২ কর্মকর্তাকে শোকজ

0 ১০৯

চট্টগ্রাম নগরীর পোর্ট কানেকটিং(পিসি)সড়কের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে ফুটপাতে নিম্নমানের টাইলস দেখে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।এ সময় মেয়র নিজেই ফুটপাতে সদ্য লাগানো কয়েকটি টাইলস তুলে ছুড়ে ফেলেন।আকস্মিক পরিদর্শনের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও সুপারভাইজারকে না পেয়ে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন।বৃহস্পতিবার(৬ জানুয়ারি)দুপুরে চসিক মেয়র নগরীর নিমতলা এলাকায় পিসি সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে যান।নোটিশ পাওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন চসিকের উপ সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজ উদ্দিন ও সুপারভাইজার মো. আরিফ।

জানতে চাইলে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন,মেয়র মহোদয়ের পরিদর্শনের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও সুপারভাইজার উপস্থিত ছিলেন না।এ জন্য তাদের শোকজ করার নির্দেশ দেন মেয়র মহোদয়।নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের শোকজ নোটিশ দিয়ে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।ঠিকাদার মেসার্স তাহের অ্যান্ড ব্রাদার্স পিসি সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজের দায়িত্বে আছে।পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্তদেরও খোঁজ করেন।দেখা গেছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় হেঁটে মেয়র ফুটপাতে টাইলস লাগানোর কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।সদ্য লাগানো অধিকাংশ টাইলস ভাঙ্গা অবস্থায় দেখতে পান।ভাঙা টাইলসের খণ্ডাংশ জোড়া দিয়ে লাগানো হচ্ছিল।মেয়র বেশ কয়েকটি ভাঙা টাইলস নিজ হাতে তুলে ছুড়ে ফেলেন।

ক্ষুব্ধ মেয়র টাইলসের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।এরপর সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে ফোন করেন।মেয়রকে বলতে শোনা যায় আমি এখানে এসেছি।অনেকক্ষণ ধরে এখানে আছি,আপনাদের কারও দেখা নেই।সুপারভাইজার কোথায়?আপনারা কি ফাজলামি শুরু করেছেন নাকি?

মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,দীর্ঘদিন ধরে পোর্ট কানেকটিং সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য ভোগান্তিতে আছেন এলাকাবাসী।সড়কটি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মালামাল পরিবহন হয়।নগরের একাংশের লোকজনও যাতায়াত করে এই সড়ক দিয়ে।কাজের মান ঠিক না থাকলে ছয়মাস পর আবারও কষ্ট পাবেন এলাকাবাসী।এ জন্য কাজের মান কেমন হচ্ছে সেটি দেখতে গিয়েছিলাম।ফুটপাতে টাইলসগুলো খুবই নিম্নমানের।সেগুলো লাগাতে নিষেধ করেছি।ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যদি মানসম্মত কাজ না করে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে জরিমানা করা হবে।

তবে নিম্নমানের টাইলস লাগানোর অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ নূর।চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম আসলে টাইলস নিম্নমানের নয়।পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে,টাইলসগুলো ঠিক আছে।আমরা তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিলাম।তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে টাইলস স্থাপন সঠিক হয়নি।কাজের মান রক্ষা হয়নি।

এদিকে মেয়রকে সড়কে দেখে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে ছুটে যান।তারা জানান,সড়কের উন্নয়ন কাজে বিভিন্ন অনিয়ম চোখের সামনেই হচ্ছে।কিন্তু সরকারি কাজ হওয়ায় তারা কেউ কিছু বলেন না।

এ সময় মেয়র বলেন,সরকার কারা।আপনারাই তো সরকার।নগরবাসীর করের টাকায় এ সব উন্নয়নের কাজ চলছে।নিজেদের এলাকার কাজ মানসম্পন্ন হচ্ছে কি না দেখভাল করার দায়িত্ব নিজেদেরকেই নিতে হবে।নিম্নমানের কাজ হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন।এই সড়কের জন্য আপনারা অনেকবছর ধরে কষ্ট করছেন।এভাবে সড়কের কাজ শেষ করলেও আপনাদের ছয় মাস পর আবারও কষ্ট করতে হবে।নির্মাণকাজের ত্রুটির বিষয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য স্থানীয়দের কাছে ব্যক্তিগত সহকারীর মোবাইল নাম্বার সরবরাহ করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!