সন্দ্বীপের সেই প্রকৌশলীকে অবশেষে প্রত্যাহার

0 ৯০০,০০৩

সন্দ্বীপ উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল আলীম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল আলীমকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে,তদন্ত শুরুর আগেই তাকে সন্দ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করে রাঙামাটির কাউখালি উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।এরআগে গত সোমবার আমার দেশ–এ ‘সন্দ্বীপে শালা–দুলাভাই সিন্ডিকেট’ শিরোনামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

আমার দেশ–এর সন্দ্বীপ প্রতিনিধি শামসুল আজম মুন্নার কয়েকদিনের অনুসন্ধানে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়মের তথ্য উঠে আসে।প্রতিবেদনটি তৈরির সময় সংগৃহীত প্রমাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে মন্তব্য চাইলে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে আলীমকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ ছিল—উপজেলা কমপ্লেক্সের ফটকে সাধারণ টাইলস ও ছয়টি বাতির কাজ দেখিয়ে ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো,মগধরা ইউনিয়নের আকরাম খান দুলাল সড়কের প্রায় ১ কোটি টাকার অসমাপ্ত কাজ স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ দিয়ে করানো,একই ড্রেন প্রকল্পকে দুইটি স্কিম দেখিয়ে ১২ লাখ টাকা তোলা,ক্রীড়া সামগ্রী কেনার নামে ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ,সিসি ব্লক বেঞ্চ দেখিয়ে ২ লাখ টাকা বিল উত্তোলনসহ একাধিক প্রকল্পে অনিয়মের প্রমাণ।এসব কাজের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী আলীম এবং তার ঘনিষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী আলম।যাদের স্থানীয়রা ‘শালা–দুলাভাই সিন্ডিকেট’ বলে আখ্যা দেন।

উপজেলা প্রকৌশলীর দুর্নীতি পাহাড় এলজিইডির একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে জানানো হয়েছে,প্রকৌশলী আব্দুল আলীমকে তাৎক্ষণিক স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে এবং দ্রুত নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সাইফুল ইসলামকে সন্দ্বীপে নতুন উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি,আমার দেশ–এ প্রতিবেদন প্রকাশ না হলে এত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতো না।তারা দুর্নীতি উন্মোচনে সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আমার দেশের সন্দ্বীপ প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানান।

তবে স্থানীয়দের মধ্যে নতুন প্রশ্নও উঠেছে—শুধু বদলি কি যথেষ্ট?বহু প্রকল্পে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ থাকায় তারা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত,অর্থনৈতিক জবাবদিহি এবং দায়ীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন। তাদের আশঙ্কা—কেবল বদলি করলে সিন্ডিকেট ভাঙবে না।প্রকল্পভিত্তিক শক্ত তদন্ত না হলে ভবিষ্যতেও একই ধরনের অনিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

স্থানীয়দের প্রত্যাশা—ঘোষিত তদন্ত যেন দ্রুত গঠন হয় এবং জনগণের অর্থ সুরক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!