সন্দ্বীপে করোনা আক্রান্ত পরিবারকে নাজেহালের অভিযোগ

0 ৪০০,০৬৫

ট্টগ্রামের সন্দ্বীপে করোনাভাইরাস আক্রান্ত একটি পরিবার ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের নাজেহাল করার অভিযোগ উঠেছে।পরিবারের ৭ সদস্য কভিড-১৯ পজেটিভ হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বাড়ি লকডাউন করে দেয়া হলেও আত্মীয় স্বজন,পরিচিতজনদের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে চাইলে বাধার মুখে পড়ে আক্রান্ত ও পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা।প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউনে থাকা বাসিন্দাদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাধার মুখে নিত্যপণ্য ও জরুরী ওষুধ সংগ্রহ করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,সাতঘরিয়া গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডের হরিবলি’র বাড়ির নিমাই সাহা সাধারণ ছুটি বাতিল করার পর সম্প্রতি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাজশাহী যায়।রাজশাহী থেকে সন্দ্বীপে ফিরে আসার পর তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্র্গ দেখা দেয়।এরপর পুরো পরিবার কভিড-১৯ পরীক্ষা করলে ২১ জুন রাতে ওই পরিবারের ৭ সদস্যের ভাইরাস পজিটিভ হওয়ার খবর দেয় প্রশাসন।প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২২ জুন থেকে সম্পূর্ণ বাড়িটি লকডাউন করে দেয়া হয়।হরিবলি’র বাড়িতে বসবাস করা ১১টি পরিবারের অধিকাংশই ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের পরিচালনাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়।তবে আক্রান্তরা শারীরিক ভাবে সুস্থবোধ করায় ডাক্তারি পরামর্শে ২৪ জুন পরিবারের ৭ সদস্যকে আবারো করোনাভাইরাসের টেস্ট করানো হয়েছে।আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় টেষ্ট রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্র্বাহী অফিসার বিদর্শী সম্বৌধি চাকমা বলেন,করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়া অপরাধ নয়।তবে আক্রান্তরা সরকারি নির্দেশনায় লকডাউনে থাকতে হবে।সারিকাইত ইউনিয়নের একটি পরিবারের ৭ জন সদস্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে।আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আক্রান্ত পরিবার ও তাদের প্রতিবেশীদের লকডাউনকালীন সময়ে সব ধরনের সহযোগিতার নির্দেশনা দিয়েছি।এরপরও কেউ যদি আক্রান্ত পরিবার ও তাদের প্রতিবেশীদের সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আমরা প্রশাসনিক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস পজিটিভ আসার পর আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে নিত্যপণ্য,কাঁচাবাজার ও ওষুধ সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু মানুষ খাবার,কাঁচাবাজার ও ওষুধ আনতে বাধা দিচ্ছে।এমনকি কেউ যদি আমাদের জন্য কিছু সরবরাহ করে তাদের মারধর করার হুমকিও দিয়েছে নূর ইসলাম কন্ট্রাকটর-সহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।

হরিবলি’র বাড়ির বাসিন্দা শিক্ষক বিকাশ সাহা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনিক নির্দেশে আমরা সম্পূর্ণ লকডাউনে রয়েছি।কিন্তু ১১টি পরিবারের জন্য নিত্যপণ্য ও জরুরী ওষুধ সংগ্রহে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি।প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হলেও স্থানীয় কিছু মানুষের অমানবিক আচরণে আক্রান্ত ও প্রতিবেশীরা কঠিন সময় পার করছে বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে রয়েছে,মঙ্গলবার ও বুধবার আক্রান্ত ও আক্রান্তদের প্রতিবেশীদের জন্য খাবার ও নিত্য পণ্য নিয়ে আসা এক দূর সম্পর্কিত আত্মীয়কে পথিমধ্যে ফিরিয়ে দেয় এলাকার কিছু ব্যক্তি।সারিকাইত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিয়মিত যোগাযোগ রাখলেও ওয়ার্ড মেম্বার হান্নানসহ অন্যরা আক্রান্ত বাড়ির জরুরী প্রয়োজনে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।বুধবার অভিযুক্তরা আগামীতে লকডাউন করা বাড়ির ত্রিসীমানায় না যেতে হুমকি দেয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

করোনা আক্রান্তদের নাজেহাল অভিযোগের বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)শেখ শরিফুল ইসলাম বলেন,করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।কিন্তু আক্রান্ত ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের নাজেহাল করার বিষয়টি আমরা অবগত নই।এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগও আসেনি।কেউ যদি আক্রান্তদের নিত্যপণ্য সংগ্রহে বাধা বা সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে তবে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!