সন্দ্বীপে জলবায়ু পরিবর্তন ও জেন্ডার বৈষম্য মোকাবেলায় সচেতনতা অর্জন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত।

0 ৯০০,০০৯

উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ও জেন্ডার বৈষম্য মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “Empowering Coastal Communities Addressing Climate Change & Gender Inequality” শীর্ষক এক সচেতনতামূলক স্কুল ও কলেজভিত্তিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ৬ নভেম্বর সকাল ১১ টায় সন্দ্বীপ মডেল স্কুল এন্ড কলেজ মিলনায়তনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে এসডিআই ও কোস্ট ফাউন্ডেশন এর পার্টনারশিপে পরিচালিত ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট।

কর্মসূচির মূল প্রতিপাদ্য ছিল— “জলবায়ু পরিবর্তন ও জেন্ডার বৈষম্য মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ বেলাল উদ্দিন। সভায় বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহন করেন সন্দ্বীপ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক নিঝুম খাঁন, সহকারী শিক্ষক আবুল হাসনাত রাসেল। মুল সেশন পরিচালনা করেন প্রকল্পের কমিউনিটি মোবিলাইজার বাদল রায় স্বাধীন। সভায় শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক রেজাউল করিম,প্রভাষক আয়েশা বেগম, সাবরিমা নাসের শাম্মী, সহকারী শিক্ষক যথাক্রমে মাষ্টার আবুল কালাম, মোঃ সালাউদ্দিন, মাষ্টার ছোটন কুমার দে, মোঃ ইসমাঈল হোসেন,মোঃ শাহজালাল সহ সকল শিক্ষক বৃন্দ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও উপকূলীয় জীবনের সংকট বিষয়ে বক্তারা বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল সন্দ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অস্বাভাবিক পরিবর্তন মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ফসল উৎপাদন কমে গেছে, মিঠা পানির সংকট দেখা দিয়েছে, অনেক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে পুরুষরা জীবিকার সন্ধানে মূল ভূখণ্ড বা শহরমুখী হওয়ায় নারীরা থেকে যাচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ ও বিচ্ছিন্ন এলাকায়। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্র্য, খাদ্য সংকট ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভুগছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে বেড়ে যাচ্ছে জেন্ডার বৈষম্য ও নারী নির্যাতন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য যেমন বাড়ছে, তেমনি লিঙ্গ বৈষম্যও তীব্র হচ্ছে। পুরুষের অনুপস্থিতি, দারিদ্র্য ও সামাজিক চাপের কারণে নারী ও কিশোরীরা ঘরে-বাইরে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি, কর্মসংস্থানে বৈষম্য, শিক্ষার সুযোগ হ্রাস—এসব সমস্যার পেছনেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কাজ করছে।

উপস্থিত বক্তারা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যখন জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়ে, তখন সমাজে দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

সচেতনতা ও নেতৃত্ব গড়ে তুলতে তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশের সমস্যা নয়—এটি সামাজিক ন্যায্যতারও প্রশ্ন। তরুণ প্রজন্মকেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবেশ রক্ষা, লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা এবং মানবিক সমাজ গঠনে নেতৃত্ব দিতে।

বক্তারা আরো বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় শুধুমাত্র সরকার নয়, প্রত্যেকেরই ভূমিকা থাকতে হবে। বিশেষ করে নারী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে স্থানীয় পর্যায়ে, যাতে তারা নিজেদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।”

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!