সন্দ্বীপে নির্বাচন সহিংসতা চরমে,আইন শৃঙ্খলার অবনতি।(একের পর এক ঘটনা ঘটছে মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নে)

0 ২৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সন্দ্বীপে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহমান ফেরদৌসী বাড়িতে মঙ্গলবার রাত ১২টায় হামলার অভিযোগ উঠেছে।

মেহমান ফেরদৌসী অভিযোগ করে বলেন,বর্তমান নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান এর অনুসারীরা রাত ১২টায় আমার বাড়িতে হামলা করে।সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। আমি স্থানীয় এমপিকে সমর্থন করায় তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।বিষয়টি থানার অফিসার ইনচার্জকে জানালেও কোন সদ উত্তর পাই নি। আমি আতংকে আছি।প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

এদিকে বুধবার বিকেল ৪ঃ৩০ টা নাগাত মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড চৌধুরী বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।ফয়সালের মামা মেম্বার প্রার্থী তছলিম জানান,মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মুন্না তার বাহিনী নিয়ে আমার ভাগ্নের উপর হামলা করে।আমি মেম্বার প্রার্থী নির্বাচন করাতে তারা আমার ভাগ্নেকে মারধর করেছে।

এই বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার এস আই মনোয়ার বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনস্থলে গিয়েছি।মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার নমিনেশন প্রার্থী প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবু তৈয়ব সুমন বলেন,মিজানুর রহমান মিজান চেয়ারম্যান এর লোকেরা আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে।মাইটভাঙ্গা ২নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রার্থী তছলিমকে হুমকি দিয়েছে তাকে মেরে ফেলবে।

কর্মীদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে।আমরা কি আওয়ামীলীগ এর না?নমিনেশন পাই নি।কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হয়নি।দলকে সম্মান জানিয়েছি।তারা সবাই নামধারী আওয়ামীলীগ।

এ বিষয়ে মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন,এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।গাছুয়া ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউনিয়ন সদস্য নূরুল আপছারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার পোলঘাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নূরুল হাসান এবং নিজামের অনুসারীরা এক হয়ে এই হামলা করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগীর ভাগ্নে নজরুল ইসলাম জাবেদ ও স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত সোমবার নির্বাচন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নূরুল হাসানের কেন্দ্রের এজেন্ট ফাহিমের সঙ্গে তর্ক বিতর্ক হয় হামলা শিকার ইউনিয়ন সদস্যের।ফাহিম এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজামের ভাই হামলায় সশরীরে অংশগ্রহণ করছেন বলে জানান স্থানীরা।

এ দিকে হামলার শিকার ইউপি সদস্য অবস্থা আশঙ্কা জনক।তাঁকে সন্দ্বীপ থেকে বর্তমানে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়েছে।বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আহতের ভাগ্নে নজরুল ইসলাম জাবেদ।নজরুল ইসলাম জাবেদ জানান,প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নূরুল হাসান এবং নিজামের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে।

হামলার বিষয়ে অভিযুক্ত নূরুল হাসান এবং নিজামের মুঠোফোনে কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান,অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(সীতাকুণ্ড)আশরাফুল করিম।

অন্য দিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রহমতপুর ইউনিয়নে রহমতপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আবু সামাদ হামলার শিকার হয়।সামাদের চাচা বলেন বিদ্রোহী প্রার্থীর ছেলের সঙ্গে চলাফেরা করার জন্য তাঁর ভাতিজার ওপর হামলা হয়েছে।

অন্যদিকে বিকেল ৪টার দিকে মগধরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্যালিশ্যা বাজার এলাকায় ফরিদ নামের এক রিকশা চালক হামলার শিকার হয়েছেন। হামলার শিকার ফরিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘আশরাফ,সোহাগসহ আরও ৩-৪ জন আমাকে মারধর করে এবং আমাকে বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে বলে।আমি কেন মহিলা মেম্বার প্রার্থী ঝরনা বেগমের নির্বাচনী ভাড়া মারছি এবং তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা করছি এই জন্য তারা আমাকে মারছে।’

হঠাৎ করে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকে সন্দ্বীপবাসি।এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(সীতাকুণ্ড)আশরাফুল করিম বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত আছে।কোন সহিংসতার খবর পেলেই দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!