স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে স্বামী খুন।

0 ৬৮৯,৮৭৪

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পূর্ব জঙ্গল চাম্বলের হায়দারী পাড়ায় স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে লম্পটদের পিটুনিতে কৃষক হাবিব উল্লাহ(২৮)মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,হাবিব উল্লাহ একজন চাষী।তার কাঁকরোল ক্ষেতের পাশে দোস মোহাম্মদ,আব্দুল কাদের এবং সাকিবেরও কাঁকরোল ক্ষেত আছে।প্রতিদিন ভোরে হাবিব কাঁকরোল ক্ষেতে যাবার আগেই তার স্ত্রী রোকসানা আক্তার যান।

মঙ্গলবার(৩০ মে)ভোর ৬টায় হাবিব যাওয়ার আগেই স্ত্রী রোকসানা আক্তার গেলে তাকে ঝাপটে ধরে সাকিব ও আব্দুল কাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।এরপর তারা দোস মোহাম্মদকেও ডেকে নিয়ে যায়।

স্বামী হাবিব উল্লাহ গিয়ে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করার দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করলে সঙ্গে সঙ্গে দোস মোহাম্মদ,আব্দুল কাদের এবং সাকিব দা’র পিছনের অংশ এবং লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে দিলে হাবিবকে ব্যাপক মারধর করে।

এই সময় স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে কোলে করে এই লম্পটরা দূরে নিয়ে যাবার জন্য উদ্যত হলে হাবিব বেহুশ হয়ে পড়ে যায়।এই অবস্থায় ক্ষেতে থাকা বিষ হাবিবের মুখে ঢেলে দেন তারা।এই অবস্থায় রোকসানার গগণ বিদারি চিৎকার শুনে শাশুড়ি হাফছা আক্তার,শ্বশুর আব্দুল মজিদসহ গ্রামবাসী ক্ষেতে ছুটে গিয়ে হাবিবকে দ্রুত বাঁশখালী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে মঙ্গলবার রাত ১১টায় হাবিব উল্লাহ মারা যান।

বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাঁশখালী থানায় লাশ নিয়ে পৌঁছলে ওই সময় নিঃসন্তান হাবিবের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বিলাপ ধরে বলেন,ও আল্লাহ,আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো,আমার ইজ্জত থেকে স্বামীর জীবনের মূল্য বেশি ছিল।লম্পট থেকে আমার ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে কেন মরে গেলা।খুনি লম্পটদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।সদ্য স্বামী হারানো রোকসানা আক্তারের গগণ বিদারি কান্নায় তখন এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বুধবার(৩১ মে)দুপুরে ঘটনাস্থলে যান সহকারী পুলিশ সুপার(আনোয়ারা সার্কেল)কামরুল ইসলাম সুমন,বাঁশখালী থানার ওসি কামাল উদ্দিন।তাৎক্ষণিক নিহতদের পরিবার ও গ্রামবাসীর বক্তব্য অনুসারে ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দোস মোহাম্মদ(৩৫),আব্দুল কাদের বরাত(২৭)এবং সাকিব(২২)নামের ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান তারা।

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিহত হাবিব উল্লাহ’র লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নিহত হাবিব উল্লাহ’র স্ত্রী রোকসানা আক্তার বলেন,আমি খুনিদের বিচার চাই। আমার ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে আমার স্বামীকে পিটুনি দিয়ে লম্পটরা হত্যা করেছে।পরে মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে।আমাকেও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত-বিক্ষত করেছে ওরা।

খুনিরা প্রচার করছে,আমার স্বামী কাঁকরোল চুরি করায় নাকি পিটুনি দিয়েছে।সেই অপমানে বিষপান করেছে।সবাইকে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করার অনুরোধ করছি।

সহকারী পুলিশ সুপার(আনোয়ারা সার্কেল)কামরুল ইসলাম সুমন বলেন,ঘটনা জানার সাথে সাথে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনসহ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!