
সারাদেশে সাংবাদিক হত্যা মামলার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নিষ্পত্তি,সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ,মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার(২০ নভেম্বর)সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এতে দেশের বিভিন্ন এলাকার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
উক্ত মানববন্ধনে সংগঠনের পরিচালক(প্রশাসন ও এডমিন)খাইরুল ইসলাম আল আমিনের সঞ্চালনায় সংগঠনের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রফিক বলেন, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পার হলেও বিচারের অগ্রগতি নেই।এখনও হত্যাকারীরা আইনের বাইরে।গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিন হত্যা, ভুরুঙ্গামারীর সাংবাদিক আনোয়ারের ওপর নৃশংস নির্যাতনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়াবহ হুমকি। এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এসময় সাংবাদিক নেতারা বলেন,মামলা প্রত্যাহার, জীবনের নিরাপত্তা এবং অন্যায়ভাবে নবায়ন স্থগিত রাখা পাসপোর্ট ফিরিয়ে পেতে ৬ বছর ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ধর্না দিতে দিতে এখন জীবন মরন সন্ধিক্ষণে পরিবার পরিজন নিয়ে সীমাহীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন কক্সবাজারের নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা। তিনি স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজারবাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
ওসি প্রদীপের রোষানলে পড়ে তার এই করুন অবস্থা।
সরকার ইতোমধ্যে অনেকে বড় বড় অপরাধীর মামলা প্রত্যাহার করলেও বহুল আলোচিত নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার ৬ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করেনি।তার কোন আবেদন নিবেদন আমলে নেননি।
ফরিদুল মোস্তফার আহাজারি শুনছেননা কেউ
বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফরিদ খান বলেন,সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হুমকি ও মামলা-হয়রানি বেড়েই চলেছে।গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় এক লজ্জাজনক অধ্যায়।সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশ করলেই যদি হামলার শিকার হন,তবে গণতন্ত্র ও কথা বলার স্বাধীনতা ঝুঁকির মুখে পড়ে। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্রকে আরও কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম)মোহাম্মদ আলী আবীর, পরিচালক(জেলা ইউনিট প্রধান)রেজাউল করিম রেজা, বিভাগীয় সমন্বয়কারী রুহুল আমিন সুজন, বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যান ইউনিয়ন (বসকো)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার,সদস্য হামিম,দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার বশির আহমেদ,সাংবাদিক স্বপন মাহমুদ,বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহিদুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মৌসুমী খন্দকার,গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খন্দকার, ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক রনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল আহমেদ।
এসময় বক্তারা বলেন,সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে স্বাধীন গণমাধ্যম টিকে থাকতে পারবে না।তাই সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ,মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সকল হত্যা মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারীর সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের বাবা-মা। তারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করেন,তাদের ছেলে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার।এ সময় তারা সরকারপ্রধানের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, আমাদের ছেলেকে মুক্তি দিন। সে নির্দোষ। শুধুমাত্র সত্য কথা বলার কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।এই দৃশ্য মানববন্ধনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে গভীর আবেগ-প্রবণতা সৃষ্টি করে।