হাফ-পাস আন্দোলন যাতে কারো ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত না হয়-খোরশেদ আলম সুজন।

0 ২১০

রিয়াদুল মামুন সোহাগঃ গণপরিবহনে হাফ-পাসের আন্দোলন যাতে কারো ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।আজ বুধবার(২৪ নভেম্বর ২০২১ইং)এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি এ অনুরোধ রাখেন।

এসময় তিনি আরো বলেন ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকে সরকার এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে খুব দ্রুত বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে প্রায় দেড় বছর ধরে সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্টান বন্ধ রাখা।পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া।পরবর্তীতে বিভিন্ন মহলের দাবী এবং পড়ালেখার পরিবেশ নিশ্চিতে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্টানসমূহ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রদান করে।

বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্টান দেড় বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা এবং অন্যান্য কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।টিকা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে করোনা ভীতি দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে সম্প্রতি গণপরিবহনে হাফ-পাসের(অর্ধেক ভাড়া)দাবিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষ ছেড়ে রাস্তা দখল করে অবরোধ এবং বিক্ষোভ করছে।এভাবে শ্রেণীকক্ষ ছেড়ে রাস্তা দখল করে কিংবা গাড়ী ভাংচুর করে দাবী আদায় গ্রহণযোগ্য নয়।অতীতেও এভাবে ছাত্র আন্দোলনের নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।

পরবর্তীতে দেখা গেছে ঢাকার নীলক্ষেত থেকে স্কুল পোশাক বানিয়ে,ব্যাগ কাঁধে চড়িয়ে ছাত্র আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে ঐ স্বার্থান্বেষী মহলটি।ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পরিকল্পিভাবে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি অপপ্রয়াসে জড়িত ছিল মহলটি।

পরবর্তীতে আইনশৃংখলা বাহিনীর তদন্তে সেসব রহস্য উম্মোচিত হয়।করোনা সংক্রমণের কারণে বিগত দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীরা কোন ক্লাস করতে পারেনি।পরীক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ ছিল।সরকার যখন পুরোপুরিভাবে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে ঠিক সে মূহুর্তে হাফ-পাসের আন্দোলনের নামে প্রতিদিন যদি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় এসে সভা সমাবেশ করে তাহলে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও স্কুল কলেজ খোলা রেখে কি লাভ প্রশ্ন করেন সুজন।

তবে হাফ-পাসের নামে এভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের শিক্ষাজীবন বিপন্ন না করে সরকার ও মালিক পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করা যায়। প্রধান সড়কগুলোতে বিআরটিসি তাদের নিজস্ব বাস সার্ভিস চালু করতে পারে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে হাফ-পাস দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারবে।লোকাল ট্রেনগুলোতেও হাফ-পাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আসা যাওয়া করতে পারে।এছাড়া সরকার এবং শিক্ষা সংগঠনগুলো আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন বাস সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে প্রধান সড়কগুলোতে হাফ-পাস কিংবা যৌক্তিক মূল্যে এ সার্ভিস কার্যকর করা যায়। তবে যে সকল বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্টান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক হারে বেতন, টিউশন ফি কিংবা অন্যান্য ফি আদায় করে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্টানকে অবশ্যই নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এসব যৌক্তিক বিষয়ে যতদিন না পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আসা যাবে ততদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের ঝগড়া,কথা কাটাকাটি কিংবা হাতাহাতি হয়ে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

সরকারও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবীর প্রতি সবসময়ই সহমর্মিতা পোষণ করে।তাই শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান থাকবে হাফ-পাস কিংবা যুক্তিযুক্ত অন্যান্য কোন দাবী থাকলে তা সরকারের উর্দ্ধতন মহলের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য।রাস্তা দখল করে বিক্ষোভ কিংবা অবরোধ কোনভাবেই দাবী আদায়ের পথ হতে পারে না।সেই সাথে সরকারের নিকটও অনুরোধ থাকবে শিক্ষার্থীদের হাফ-পাস কিংবা যৌক্তিক কোন দাবী থাকলে তা শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধানের পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য। এভাবে দিনের পর দিন শ্রেণীকক্ষ ছেড়ে, রাস্তা দখল করে অবরোধ কিংবা বিক্ষোভ কারোরই কাম্য নয় বলে মত প্রকাশ করেন সুজন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!