অভয়নগরের পথে পথে কাজের সন্ধানে হবিগঞ্জের সিতাব আলী।

ভয়নগরে জীবিকার সন্ধানে মোঃ সিতাব আলী এসেছেন সুদূর হবিগঞ্জ থেকে।শিল নোড়া ধার কাটাইবেন,কাইচি শান দেওয়াইবেন হ্যান্ড মাইকে প্রচার করতে করতে শুরু হয় তার পথ চলা।

তিনি বলেন,তিনি দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন।খুলনার ১০টি জেলায় তিনি ঘুরে ঘুরে এভাবেই জীবিকা উপার্জন করে থাকেন।গ্রামগঞ্জে তার এই কাজ ভালোই হয়।তিনি স্বাচ্ছন্দেই এ কাজ করছেন।প্রতিদিন প্রায় হাজার বারো শ টাকা উপার্জন করে থাকেন।১টি কাইচি ধার কটাইতে মূল্য নেন ২০ টাকা,কাপড় কাটা কাইচির জন্য ৩০ টাকা,শিল নোড়া কাটাতে নেন ৬০/৭০ টাকা।

সিতাব আলী বলেন বর্তমানে অভয়নগরের নওয়াপাড়া শহরে তিনি একাই বাসা ভাড়া থাকে। হবিগঞ্জে তার পরিবারে স্ত্রীসহ দুটি ছেলেমেয়ে রেখে এসেছেন তিনি।প্রতি খণেই মনে পড়ে পরিবারের কথা।তাদের কখা মনে রেখেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।সিতাব আলী জানান এ কাজে বেশ ঝুকিও রয়েছে।শিল নোড়া কাটার সময় হাতুড়ির আঘাতে সেনি ভেঙ্গে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগে ক্ষত হয়ে যায়।

গ্রামে শিল-নোড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এখন চলছে মন্দা।বাটা মসলার পরিবর্তে শহরে প্যাকেটের গুঁড়া মসলার দিকে বেড়েছে ঝোঁক।অনেকে যন্ত্রের সাহায্যে ব্লেন্ড করছেন মসলা।আর এসবের প্রভাব পড়েছে সিতাব আলীর মতো মানুষের জীবিকায়।

গৃহবধুরা বলছেন,এখন মশলার ব্যবহার অনেকটা পাল্টে গেছে।আগের মতো বাটা মশলা ব্যবহারের আর তেমন চলন এখন দেখা যায় না।বেশিরভাগ মানুষই দোকান থেকে প্যাকেটের গুঁড়ো মশলা কিনে আনেন।এমনকী আদা,রসুনও বাটতে হয় না,কারণ তারও পেস্ট পাওয়া যায় প্যাকেটে।তাই শিলে বাটার কষ্টটা আর কেউ করতে চান না।

আগে দেখা যেতো নানা কিছুর হকার আসত বাড়ির রাস্তায়।একজন খাজা বিক্রি করতেন,একজন বিক্রি করতেন কাঁসার বাসন।সাইকেল চালিয়ে বা ঘাড়ে ঝুলিয়ে আসতেন ছুরি কাঁচি ধার দেওয়ার লোক। আর আসতেন শিল কাটানোর সেই প্রৌঢ় মানুষগুলি।অনেক দূর থেকে শোনা যেত ‘শিল কাটাবেন…..।সেই সুর আজ তেমন শোনা যায় না।গেলেও কালেভদ্রে,মাঝে মধ্যে।

সিতাব আলী কাঁধে করে কাইচি বটি,দা ধার করার জন্য পা চালিত কাঠের উপর প্রস্তুকরা যেন্ত্রটি বয়ে নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছে সেবা।ঘরে বসে এই সেবা পেয়ে মানুষ সাচ্ছান্দবোধ করছেন৷

Comments (০)
Add Comment