এখন মানুষের জানার সময় নায়ক মান্নার মৃ’ত্যুর আসল র’হস্যঃ শেলী মান্না।

বাংলাদেশের শূন্য দশক পরবর্তী চলচ্চিত্রের সময়টা এককভাবে নিজের আয়ত্তে রেখেছিলেন চিত্রনায়ক মান্না।সেই মান্না আকস্মিক ভাবে ‘নাই’ হয়ে গেলেন। মান্নার মৃ’ত্যু এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নিতেপারেনি লক্ষ কোটি ভক্ত।এখনো মান্নার জন্য চোখের জল আসে অজস্র অনুরাগীর।আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি চিত্রনায়ক মান্নার প্রয়াণের আজ ১৪ বছর।

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মা’রা যান সৈয়দ মোহাম্ম’দ আসলাম তালুকদার ওরফে মান্না।কিন্তু মান্নার ওই মৃ’ত্যুকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মানতে রাজি নন মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না।তার দাবি মান্নাকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।কোনো প্রস্তুতি না রেখেই মান্নাকে হার্টের ইনিজেকশন্দ দেওয়া হয়েছে,যেটা উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা শাস্ত্রে ঘটে না।শেলি জানান, এ বছরই মান্নার শুনানি হবে,আর মানুষ জানবে মান্নার মৃ’ত্যু কিভাবে হয়েছে।

সম্প্রতি মান্নার স্ত্রী শেলী,মান্নার মৃ’ত্যুর ওই সময়টা পুরোপুরি কথাপ্রবাহে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উঠোনে বসে শেলী বলেন, ‘আমি একজন ডাক্তারের মেয়ে।আমার বাবা একজন ডাক্তার।বাংলাদেশে এমবিবিএস তখনও চালু হয়নি।আমার বাবা কলকাতা থেকে পাশ করেছেন।সেই আমলের ডাক্তার।আমার বাবা যেহেতু আক্তার,সেহেতু আমি ডাক্তারদের খাটো করে কিছু বলছি না।বলতে গেলে আমাদের দেশের সিস্টেম,প্রক্রিয়ার কথা বলতে হয়।আমার বাবা ডাক্তার সেহেতু আমি কিছুটা জানি।আমি যেখানে চাকরি করি সেখানে সব ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নেই। উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে হয়।’

মান্নার মৃ’ত্যুর পূর্বের সময়টা উল্লেখ করে শেলী বলেন, ‘মান্না মাঝরাতে যখন বাসায় ফিরেছে তখন বুকে একটু ব্যাথা করছিল।রাতে খাওয়া দাওয়া করেছে,কিন্তু ব্যাথা তো যায়নি।মান্না হলো অতি সতর্ক একজন মানুষ।আমরা হলে হয়তো এতোটা হতাম না।মান্না ইগনোর করে না।একটা অ্যালার্জি হলেও ডাক্তারের কাছে যায়।ওর অসুখ বিসুখ বলতে কিছু ছিল না,শুধু অ্যাসিডিটি ছিল।যেহেতু ব্যাথা কমছে না,মান্না ভাবল ইউনাইটেড হাসপাতালে যাই।কেন ইউনাইটেডে যাবে,কারণ পিতা মাতার শুটিং ইউনাইটেড হাসপাতালে করা হয়েছিল।তখন মনে হয়েছিল ইউনাইটেড হাসপাতাল মনে হয় বেস্ট। ওয়েল অর্গানাইজড।

শেলী বলেন,মান্না কিন্তু গাড়ি চা’লিয়ে গেছে।ডাক্তারের ভাষায় অ্যাকুইট হার্ট অ্যাটাক,কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে।যদি কারো কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় সে কোনোভাবেই গাড়ি চা’লিয়ে যেতে পারবে না। একটা স্টেপও নিতে পারবে না।ইউনাইটেড হাসপাতাল আমাদেরকে যেসব ফুটেজ দিয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে মান্না হেঁটে গিয়েছে।তাঁর বিভিন্ন টেস্ট করিয়েছে।তারপর ভর্তি হয়েছে।তাকে কিন্তু কেউ ধরেও নেয়নি,কিছু না।সে একজন স্বাভাবিক মানুষ গিয়েছে।গ্যাসের পেইন,হার্টের পেইন সেইম। ডাক্তাররাও একইভাবে ট্রিটমেন্ট করেন।

হাসপাতালে ভর্তির নিউর্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে শেলী বলেন,মান্না যখন হাসপাতালে ভর্তি হলো তখন ভোর পৌনে পাঁচটা।আমি যদি বাংলাদেশে থাকতাম তাহলে কী করতাম?যে হার্টের স্পেশালিস্ট তাকে দেখাতাম।এই কারণে…।আমার যখন হাত ভে’ঙে গিয়েছিল তখন আমি অর্থোপেডিকস ডাক্তারের কাচফহে গিয়েছিলাম।

সাধারণ ডাক্তাররা কিন্তু আমার হাত জোড়া লাগাতে পারবে না।মান্নার চিকিৎসা কিন্তু সাধারণ ডাক্তাররা করেছে।ট্রিটমেন্ট করে যখন কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে।৭.৪০ এর দিকে তারা হার্টের একটা ই’নজেকশন দেয়।ইঞ্জেকশনের নাম এসকে।অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই এসব করা হয়েছে।আমরা কেস করেছি,এগুলো পয়েন্ট আছে।’

উন্নত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা সামনে টেনে এনে প্রয়াত চিত্রনায়কের স্ত্রী বলেন সিঙ্গাপুর বলেন, ‘ব্যাংকক বলেন,উন্নত দেশে অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত রেখে,কার্ডিওলজিস্টের সাথে রেখে তারপর ওই এসকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।মান্নার বেলায় এসব করা হয়নি।ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর মান্না গোঙ্গাইছে।গোঙরানিতে মান্না তখন বমি করে দিয়েছে।তাদের ডাক্তার রুটিন অনুযায়ী ৯ টায় এসেছে।

ডাক্তার ফাতেমার আন্ডারে ট্রিটমেন্ট।ওই হাসপাতেল কি প্রোসিডিউর ছিল না বলেন?ওই সময় ইমের্জেন্সিতে নিয়ে অভিজ্ঞদের সাথে নিয়ে রাইট টাইমে রাইট চিকিৎসাটা করতো,দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হিসাব কিন্তু দিতে পারেনি।আমাদের সিক্সথ সেন্স কাজ করেছে,এই হতো পারতো,ওই হতে পারতো।’

দুই ঘণ্টার হিসেব কি পাননি?শেলী বলেন, ‘ওরা তো আমাদের ফেস টু ফেস আসেইনি।মা’মলায় ওরা দীর্ঘায়িত করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।মা’মলাটাকে ম্যানুপুলেট করে ফেলছে।মান্নার মতো একজন মানুষের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে একজন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে?এই বছরই একটা শুনানি হবে।এই শুনানি হলে হয়তো আমরা একযুগ পরে হলেও ন্যায় বিচার পাবো। মানুষ জানবে যে মান্না কিভাবে মা’রা গেছে।ভু’ল চিকিৎসা,দেরি চিকিৎসা এসবই মান্নার জীবনে ঘটেছে।’

Comments (০)
Add Comment