ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় সন্দ্বীপে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত,অরক্ষিত উড়িরচর ইউনিয়ন।

ঘূর্ণিঝড় ‘‘মোখা’’ প্রবল শক্তি নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে এগিয়ে আসছে। তাই আসন্ন দূর্যোগ মোকাবেলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসন জরুরী ভিত্তিতে এক সভা আহবান করে।

এ উপলক্ষে ১০ মে সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরী সভা সকাল ১০ টায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্রাট খীসা। এ ছাড়া সভায় সন্দ্বীপের সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তা ও বেসরকারী (এনজিও) প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন-ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সন্দ্বীপ উপজেলার মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও সাইক্লোন শেল্টার মিলে মোট ১৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৪টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে ২১টি মেডিকেল টীমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া সন্দ্বীপের প্রতিটি উপজেলায় ১ জন করে সরকারী কর্মকর্তাকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রেডি ফুড এর ব্যবস্থা করা হবে বলেও সভায় নির্বাহী অফিসার জানান। এ জন্য সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষার্থে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

এ দিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসন সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখলেও দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের মূল ভূ-খন্ডের সারিকাইত ২নং ওয়ার্ডস্থ বেড়ীবাঁধ, কালাপানিয়ার ২ ও ৫নং ওয়ার্ডস্থ বেড়ীবাঁধের ১ কিলোমিটার এলাকায় ২/৩টি পয়েন্ট অত্যান্ত নাজুক বলে জানিয়েছেন সারিকাইতের ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির ও কালাপানিয়ার স্থানীয় চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন। এ ছাড়া রহমতপুর ও আজিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিমে বেড়ীবাঁধের অনেকাংশ দুর্বল ও সরু। উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে এগুলো টিকবে কিনা সন্দেহ এলাকাবাসীর।

এ ছাড়া সন্দ্বীপ মূল ভূ-খন্ড থেকে নদী-সাগর বেষ্টিত বিচ্ছিন্ন উড়িরচর ইউনিয়নের চর্তুপাশে বেড়ীবাঁধ নেই যুগ যুগ ধরে। বিশেষ করে চরের দক্ষিণ অংশ নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। এ চরের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের জন্য মাত্র ২টি সাইক্লোন শেল্টার ও ২/১টি সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল ভবন আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উল্লেখ্য, ৮৫’র প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে বেড়ীবাঁধহীন উড়িরচরে প্রায় ১০ হাজারের উপরে মানুষ মারা গিয়েছিলো যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয় এবং তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রাধান সহ ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানরা সরেজমিনে উড়িরচরে এসেছিলেন।

Comments (০)
Add Comment