গাজীপুরে প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার নেপথ্যের কারণ জানিয়েছে পুলিশ।হত্যার পর প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চাঁদাবাজি নয়,বাদশা নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় খুন হয়েছেন ওই সাংবাদিক।গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার(অপরাধ উত্তর)রবিউল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এদিকে গাজীপুরে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে ও গলা কেটে করে নৃশংসভাবে হত্যা এবং অন্য এক সাংবাদিককে পাথর দিয়ে পা থেঁতলে আহতের ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।সাংবাদিক আহতের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার হলেও খুনের ঘটনায় কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।বৃহস্পতিবার(৭ আগস্ট) রাতে সংশ্লিষ্ট থানায় ওই দুটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুই সাংবাদিক হতাহতের ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছেন সহকর্মী ও স্বজনরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার(৭ আগস্ট)রাত পৌনে ৮টার দিকে মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে(৩৮)চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
ঘটনার পর প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েকজন যুবক বাদশা নামের এক ব্যক্তিকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে এবং ধাওয়া দেয়।এক পর্যায়ে আসাদুজ্জামান তুহিনকে শত শত মানুষের সামনে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় আহত বাদশা বলেন,চৌরাস্তা পার হওয়ার সময় এক নারী তাকে টার্গেট করে টাকা-পয়সা নিয়ে নিতে চাইলে তিনি নারীকে আঘাত করেন।এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
এ বিষয়ে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন খান বলেন,সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
নারীঘটিত অপকর্মের ভিডিও ধারণের জেরে খুন হন সাংবাদিক:
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এক নারী ও তার চক্রের সদস্যরা একজন লোককে টার্গেট করেন।এ সময় ওই লোক নারীর ফাঁদে না পড়ে ওই নারীকে একটি থাপ্পড় দেন।এ সময় তার পাশে থাকা চক্রের ওত পেতে থাকা অন্য দুষ্কৃতকারীরা তাকে ধাওয়া দেয়।পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে।এ সময় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন সেই ভিডিও চিত্রধারণ করতে গেলে ওই চক্রের সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
এদিকে,সদর থানা এলাকায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে পাথর দিয়ে পা থেঁতলে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে আহতের ঘটনায় তার মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে,গত বুধবার(৬ আগস্ট)সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনের জেরে তাকে পাথর দিয়ে থেঁতলে ও কিলঘুসি মেরে আহত করেন বলে অভিযোগ স্বজন ও সহকর্মীদের।