ফরিদপুর পৌরসভায় পারিবারিক কলহ নিস্পত্তিতে এসে গৃহবধূ হমলার স্বীকার

ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ প্রায় ৮ বছর ধরে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত স্ত্রীকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী লিটন চন্দ্র কর (৩৫) নামের এনআরবি ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে হামলাসহ প্রতারনা করে আসছে লিটন করের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর এলাকার মৃত নিরঞ্জন ভৌমিক এর কণ্যা শিখা রানী ভৌমিক জানান, গত ৮বছর আগে জেলার গুহ লক্ষিপুর পাল পাড়া এলাকায় গণেশ চন্দ্র করের পুত্র লিটন চন্দ্র কর (৩৫) এর সাথে ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিবাহের পর একপর্যায়ে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্যের কথা ভুলে অন্যায় অত্যাচার নিরবে মুখ বুঝে সহ্য করেছি। তার অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেরে যাওয়ায় আমার স্বামী আমাকে আমার বাবার বাড়ী রেখে আসে। এরপরে আমার কোনো খোঁজ খবর নিতে আসে নাই। নির্দয়তামুলক আচরন করার পরেও তিনি বিভিন্ন ভাবে ভাড়াটিয়া লোকজনের মাধ্যমে আমার বাবার বাড়ীতে গিয়ে আমাকে জীবন নাশের হুমকি দেয় এবং বলেন বিবাহটি বিচ্ছেদ হয়ে যেতে। এছাড়া বিভিন্ন মহলে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ প্রচার করে নিজের কুউদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য চেষ্টা করছে। এমনকি মিথ্যা আইনগত ভাবে হয়রানী করার পায়তার করছে। এর সাথে পারিবারিক গোলযোগ হওয়া আমি বিজ্ঞ নারী ও শিশু আদালতে ৪২/২০২০ নং একটি মামলা দায়ের করি, যে মামলা চলমান রয়েছে। এই মামলা লিটন চন্দ্র কর জামিনে থাকা অবস্থায় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে। এমত অবস্থায় আমার বাবার বাড়ী শুধু বিধবা এক মায়ের সাথে থাকা নিরাপত্তহীনতার মধ্যে থাকায় কোতয়ালী থানায় ৩১/০৫/২০২০ তারিখে একটি জিডি করি, যার নং ৮৬৯। জিডির বিষয়ে কোতয়ালী থানা সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি মীমাংসার জন্য ফরিদপুর পৌর মেয়রের নিকট প্রেরণ করে। মেয়র বিষয়টি শুনানির জন্য গত ১৯/১০/২০ তারিখে ধার্য করে। ধার্য তারিখে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেন। স্বামী লিটন চন্দ্র কর স্ত্রীকে তার সংসারে ফিরিয়ে নিতে আন্তরিক না হওয়ায় উভয় পক্ষের বিরোধ নিস্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। এ পর্যায়ে বিরোধ নিস্পত্তির সভা শেষে বেলা ২.৩০ মিনিটে আমি আমার আত্মীয়সহ সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে পৌরসভার নিচে অটো বাইক যোগে বাসার উদ্দেশ্যে অপক্ষেমান থাকা অবস্থায় লিটন চন্দ্র করের উপস্থিতিতে তার ভাড়াটে সন্ত্রাসী মিন্টু সহ অজ্ঞাত দুই ব্যাক্তি আমার মামাতো ভাইকে অটো থেকে নামিয়ে মারপিট করে এবং আমাকে গালি-গালাজসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিষয়য়ি তাৎক্ষনিক মেয়র এর নিকট লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এসময় পৌরসভার কর্মচারিদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। এলাকাসুত্রে জানা যায় সদর উপজেলাধীন কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন নিবাসি মৃত নিরঞ্জন ভৌমিক এর ৩ কন্যা ১ স্ত্রী রেখে মৃত্যু বরণ করেন। কনিষ্ঠ কন্যা শিখা রানী ভৌমিক, নিরাঞ্জন ভৌমিকএর পুত্র সন্তান না থাকায় বড় ২ জামাই লিটন চন্দ্র কর এর সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ দেন। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ি উক্ত মামলাটি নিস্পত্তির জন্য উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছিল। শালিশে লিটন চন্দ্র কর তার স্ত্রী শিখা রানী ভৌমিকে বাড়ীতে নিতে আন্তরিক না হওয়ায় সমস্যা সমাধান সম্ভব হয়নি। পুনরায় উভয় পক্ষকে নিজেদের মধ্যে নিস্পত্তি হয়ে আসার জন্য ১৫ দিনের জন্য একটি সময় দেওয়া হয়েছিলো।পরে জানতে পারি বাদী পক্ষ শিখা রানী অটোতে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় কে বা কাহারা তাদের অটো থামিয়ে মারধর ও গালিগালাজ করছে এবং প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে। এ বিষয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা করে মর্মে শিখা একটি অভিযোগ দায়ের করে আমার নিকট। পরে আমি একটি প্রতিবেদন তৈরী করে আদালতে প্রেরণ করেছি। এখন আদালত মামলাটি আইন অনুযায়ী বিচার হবে। এ বিষয়ে অত্র সালিশে উপস্থিতিতে থাকা হাট গোবিন্দপুর এলাকা বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সালাম মোল্লা জানান, সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তিতে এসে পৌরসভা চত্তরে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হওয়ায় শিখা রানী ভৌমিক চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাই সঠিক তদন্ত পুর্বক লিটন চন্দ্র করের হামলা নির্যাতন ও মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধসহ সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এব্যাপারে লিটন চন্দ্র কর বলেন, কে বা কাহার উক্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে আমরা তা জানিনা। আমি তখন পৌরসভার অফিস রুমে ছিলাম, তখন মেয়ের বড় ভগ্নিপতি আমার কাছে ছিল। তবে ডাক-চিৎকারের শব্দ শুনেছি।

Comments (০)
Add Comment