ভোট চোরদের বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয় নাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভোট চোরদের বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয় না বলে বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল বলে তারা বেশি দিন ক্ষমতায় টিকতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

রোববার(৪ ডিসেম্বর)বিকেলে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসেম্বরের ১০ তারিখ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ছক এঁকেছিল,এজন্য দিনটি বিএনপির প্রিয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন,আমি বিএনপিকে বলে দিতে চাই,৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিল।এ কারণেই বাংলাদেশের মানুষ তাকে মেনে নেয়নি।সারাদেশ ফুঁসে উঠেছিল।খালেদা বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে।দেড় মাসেরও কম সময়ে তারা পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন,জনগণের ভোট কেউ চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না।ওরা ভোটে যেতে চায় না।কারণ জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এসেছিল।গণতান্ত্রিক ধারা তাদের পছন্দ না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের উন্নতি হয়।বাংলাদেশ আজ উন্নতি হচ্ছে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকার কারণে।

জিয়াউর রহমান একটি ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি রেখে গিয়েছিলেন,খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবন খুলে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন,খালেদা জিয়া আজ জেলে কেন।এতিমের নামে টাকা এনে নিজে আত্মসাৎ করেছে।জিয়া ট্রাস্টের টাকা চুরি করেছে বলেই সাাজাপ্রাপ্ত আসামি।

শেখ হাসিনা বলেন,খালেদার ছেলে একটা টাকা চুরি করেছিল,সিঙ্গাপুরে মারা গেছে।টাকা পাচার করেছিল, আমরা সেই টাকার কিছু ফিরিয়ে এনেছি।আরেকজন কুলাঙ্গার বানিয়ে রেখে গেছে জিয়াউর রহমান। লন্ডনে বসে আছে।সে লন্ডনে কেন আছে।২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছিল।সেখানে রাজার হালে থাকে আর দেশে যত নাশকতার কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে,ব্যাংকে টাকা নেই।যারা টাকা তুলতে গেছে সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে।কেউ কি ফেরত এসেছে।ব্যাংকে টাকা রাখবেন না,কোথায় রাখবেন।ঘরে এনে রাখলে সেই টাকা তো চোরেও নিয়ে যেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন,গুজব রটিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।মানুষের সর্বনাশ করা এটাই বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের কাজ।নাকি চোরের সাথে তাদের কোনো সখ্য আছে।ওরা আসলে নিজেরাই মানুষের টাকা মেরে খায়।সেই কাজই করে যাচ্ছে।

এ সময় সরকারপ্রধান আক্ষেপ করে বলেন,আমরা দেশকে ডিজিটাল করলাম,আর ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

এ সময় তিনি রিজার্ভ নিয়েও কথা বলেন।জানান,দেশে ৩৪ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ আছে।এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।এছাড়া দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই বলেও জানান সরকারপ্রধান।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,দয়া করে কেউ গুজবে কান দেবেন না।চিলে কান নিয়ে গেছে শুনেই দৌড়াবেন না,কান আছে কি না সেটা দেখবেন।ওরা মিথ্যা কথা বলে,এটা ওদের অভ্যাস।আগে গুজবটা সঠিক কি না সেটা দেখবেন। এটা শুধু চট্টগ্রামবাসীর জন্য নয়,সারাদেশের মানুষের জন্য আমার আহ্বান।

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ছাড়াও আরও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।এসব প্রকল্প চট্টগ্রামবাসীর জন্য উপহার বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

চট্টগ্রাম মহানগর,উত্তর জেলা,দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে দলটির নগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,সংসদ সদস্য,মন্ত্রীসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে হেলিকাপ্টারযোগে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ)প্যারেড গ্রাউন্ডে ৮৩তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সের কমিশন উপলক্ষে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২২’-এ যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments (০)
Add Comment