মঠবাড়িয়ায় যৌতুকের দাবীতে দুই সন্তানের জননীকে ৩ দফায় অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নুরুন্নাহার আক্তার সুমী(২৪)নামে দুই সন্তানের জননীকে যৌতুকের দাবীতে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ড স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন।নির্যাতিতা সুমী উপজেলার দক্ষিণ সোনাখালী গ্রামের বাবুল শিকদারের মেয়ে।নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে মঠবাড়িয়া রিপোটার্স ইউনিটিতে সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছে নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ।
লিখিত বক্তব্যে সুমি বলেন,২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলতাফ তালুকদারের ছেলে মনির তালুকদারের সাথে তার বিয়ে হয়।বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে স্বামীকে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ,টিভি,স্বর্ণালংকার সহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল দেয়া হয়।দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সী একটি পুত্র ও দেড় মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।২০১৯ সালে মনির তালুকদার চরদুয়ানী বাজারে নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করার সময় শ্বশুর বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা নেয়।সুমীর বিবাহের পরে বাবা বিদেশে থাকা অবস্থায় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তখন তিনি চিকিৎসার জন্য দেশে আসেন।দেশে চিকিৎসার পরে তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পরে।তাকে বেলোরে সিএমএস হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার পরিবার প্রায় নিঃস্ব হয়ে পরে।
এদিকে পাষন্ড স্বামী মনির তালুকদার হোসেনপুর গ্রামের বাড়িতে নতুন বিল্ডিং করার জন্য বাবার বাড়ি থেকে আবারও টাকা এনে দেওয়ার জন্য সুমীকে চাপ দেয়।এবিষয় নিয়ে সুমিকে মারধর করলে বাবার বাড়ি চলে আসে।পরে আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সুমীকে নির্যাতন করবে না বলে স্বামী মনির তালুকদার ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন নেয়।পুনরায় আবার পরার্থলোভী মনির তালুকদার সুমিকে টাকার জন্য চাপ দিলে সুমী অস্বীকার করলে গত ২২ ডিসেম্বর সুমীকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মারধর করে।
এ খবর মোবাইলে জানতে পেয়ে সুমীর মা মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হন।মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে সুমীর মা ও নানা পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল হোসেনপুর গ্রামে যান।এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের সামনেই সুমীর মা ও নানাকে তারা মারধর করে।এখবর শুনে সুমীর অন্যান্য স্বজনরা মোটরসাইকেলযোগে ওই বাড়িতে গেলে তাদেরকেও তৃতীয় দফায় মারধর করে।পরে সুমীকে নিয়ে পালিয়ে এসে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতরা ভর্তি হন।
এদিকে সুচতুর স্বামী মনির তালুকদার হামলার বিষয়টি আড়াল করতে সুমীর স্বজনদের বিরুদ্ধে উল্টো পাথরঘাটা থানায় একটি মিথ্যা লুটের মামলা দায়ের করে।পরে সুমীর মা বাদী হয়ে নির্যাতনের ঘটনায় পাথরঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনে দুই সন্তান নিয়ে নুরুন্নাহার আক্তার সুমি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
Comments (০)
Add Comment