সন্দ্বীপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

আগামী ২৫মে সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।গত ২৩ জানুয়ারী সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাষ্টার শাহজাহান বিএ’র মৃত্যুতে এ পদটি শূণ্য হলে নির্বাচন কমিশন গত ৯ এপ্রিল সন্দ্বীপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করে।

ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী গত ৮ মে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে মনোয়নপত্র জমা দানকারী ৪ প্রার্থীর একজনও তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।ফলে ৯ মে এ চার প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্ধ দেন রিটানিং অফিসার মো: জাহাঙ্গীর আলম। তারা হলেন-বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মাইনউদ্দিন মিশন(নৌকা),জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(জাসদ)মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম মাহমুদ(মশাল),স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটি সহ-সভাপতি,সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বিএলএফ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম (আনারস),স্বতন্ত্র প্রার্থী সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সন্দ্বীপ উপজেলা কমিটির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান বেলাল(দোয়াত-কলম)।

৯ মে প্রতীক বরাদ্ধ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণার প্রথম দিনেই সন্দ্বীপ উপজেলা সদর সহ সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনার অংশ হিসেবে মাইকিং সহ মিছিল-সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এর মধ্যে জাসদ প্রার্থী আবুল কাশেম মাহমুদের মশাল মার্কার পক্ষে বিকাল ৪ টায় সন্দ্বীপ উপজেলা সদরে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টায় সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জাসদ নেতা নুরুল আকতার সহ অন্যান্য স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।জাসদের নির্বাচনী সমাবেশ চলাকালীন নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী সভা বদ্ধ করে দেয়ার জন্য জাসদ নেতৃবৃন্দকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নির্দেশ দেয়া হলে কেন্দ্রীয় জাসদ নেতা নুরুল আকতার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্রাট খীসা’র সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে অবশ্য সভা সংক্ষিপ্ত করে সমাবেশের কাজ শেষে পুনরায় উপজেলা সদরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী মাইনউদ্দীন মিশনের নৌকা মার্কার পক্ষে সন্দ্বীপ উপজেলা সদর সহ বাউরিয়া,হারামিয়া ও সারিকাইত ইউনিয়নে স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।অন্যদিকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী রফিকুল ইসলামের আনারস মার্কার পক্ষেও সন্দ্বীপের মুছাপুর ইউনিয়নের ধোপার হাটে স্বত:স্ফূর্ত মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ দিকে গত ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সভায় রিটানিং অফিসার জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের উদ্দেশ করে বলেন-কোন অবস্থাতেই নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করা যাবে না।এক্ষেত্রে ব্যাত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।এমন কী ২৫মে ভোট গ্রহনের দিন ভোট কেন্দ্রে কোন প্রকার অনিয়ম বা শান্তি ভঙ্গের কারণ হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হবে।প্রয়োজনে গুরুতর পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন বাতিল করে দেয়া হবে।তিনি জোর দিয়ে আরো বলেন-বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল এর নিজ এলাকা চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা সঙ্গত কারনেই সন্দ্বীপের নির্বাচন কঠিন ও কঠোর হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।স্বচ্ছ,অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে রিটানিং অফিসার জাহাঙ্গীর আলম হুশিয়ারী দিয়ে বলেন।এ সময় তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা নির্বাচন অফিসার দেবাশীশ দাশ।

উল্লেখ্য,সন্দ্বীপে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭৫৮ জন।তন্মধ্যে ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের।এর মধ্যে মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৯৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ২২ হাজার ৫৯ জন। সন্দ্বীপের মোট কেন্দ্র সংখ্যা ৮৬টি।তন্মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।তবে সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জনমতের ভিত্তিতে যে অভিমত পাওয়া গেছে,তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু,অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে এবং কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়া ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারলে ত্রিপক্ষীয় প্রতিদ্বন্ধিতার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।এমন কী ভোটের সব হিসাব নিকাশও উল্টে যেতে পারে।

Comments (০)
Add Comment