সন্দ্বীপে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভ্রাম্যমান আদালতের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

সন্দ্বীপে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভ্রাম্যমান আদালতের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে।সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে ভূয়া স্বাস্থ্য সনদ প্রদান ও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ঠেকানোর নাম করে বিভিন্ন বেকারী ও হোটেল মালিকের কাছ থেকে চাঁদা বাজির অভিযোগ উঠেছে।

ওমর ফারুকের মূল পদবী স্বাস্থ্য সহকারী হলেও স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ট্যাকনোলজিস্ট(SIT)কোর্স করে নিজ বেতনে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে ফেনী থেকে সন্দ্বীপ উপজেলায় পদায়ণ হয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসে।

তার কর্মপরিধির মধ্যে রয়েছে,উপজেলা ভিত্তিক খাদ্য স্থাপনা পরিদর্শন,দৈনন্দিন রিপোর্ট প্রদান,খাদ্য নমুনা সংগ্রহ ও ল্যাবে প্রেরণ,নমুনা ভেজাল হলে আদালতে মামলা দায়ের,পঁচা-বাসি ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য জব্দ এবং ধ্বংস করা,সংক্রামক রোগের কারণ অনুসন্ধান,স্কুল ও কমিউনিটিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান ইত্যাদি।

কিন্তু ওমর ফারুক সে সব দায়িত্ব ভুলে গিয়ে অবৈধ উপায়ে টাকা উপার্জনের নেশায় মাঠে নেমেছে।বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হোটেল ও বেকারীতে গিয়ে কর্মচারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেখানো ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ভয় দেখিয়ে তাদের থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া স্বাস্থ্য সনদ এনে দেবে এই মর্মে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসে।

গুপ্তছড়া বাজারে এনএস বেকারীর ম্যানেজার বাবর অভিযোগ করে বলেন,গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ওমর ফারুক চৌধুরী আমাদের বেকারীতে এসে কতজন কর্মচারী রয়েছে জানতে চান।আমি ১০ জন বলার পর সে বললো ১০ জনের স্বাস্থ্য সনদ বাবদ ৫ হাজার টাকা দিন,আর ভ্রাম্যমান আদালত যাতে না আসে তার জন্য টাকা দিন।না হয় অনেক জরিমানা গুনতে হবে।তখন আমরা ভয়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে দিয়েছি।

তবে আমাদের টাকার বিনিময়ে কোন রশিদ বা সনদ প্রদান করেনি।অন্যদিকে সেটা সিভিল সার্জন অফিস থেকে এনে দেবে বলেছে।এরপর ইমাম বেকারীতেও গিয়েছে।তবে তারা টাকা দিয়েছে কিনা জানিনা।

বিভিন্ন সুত্র ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্বাস্থ্য সহকারীর দেয়া তথ্য থেকে জানা যায় জেলা স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার সাথে ফেইসবুকে তার ঘনিষ্ট কিছু ছবি দেখিয়ে তার সাথে সম্পর্কের প্রভাব খাটিয়ে এসব অপকর্ম চালায় ওমর ফারুক।অফিসেও তার প্রভাব প্রচুর একই কারনে।

এ বিষয়ে ওমর ফারুকের মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রথমে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন আমি চট্টগ্রাম আছি সন্দ্বীপ গেলে টিএসও সহ আপনার সাথে বসবো।

প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,আমি টিএলসিএ রাসেল সহ গিয়েছি।টাকা নিয়েছি স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সনদ প্রদানের জন্য,সনদ আমি দেবো।কর্মচারীকে উপস্থিত না করে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ সিভিল সার্জন অফিস থেকে কিভাবে দেবে এবং রশিদ বিহীন টাকা গ্রহনের কোন নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ইলিয়াস চৌধুরীর কাছে রশিদ বিহীন টাকা গ্রহন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা কর্মচারীর উপস্থিতি ছাড়া সনদ প্রদানের ভিত্তি কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন,এগুলো নিয়ম বহির্ভুত, আমি অভিযোগ শুনে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তে সুবিধা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফজলুল করিম বলেন, আমাকে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ফোন করে ওদের বেতন বন্ধ করে দিতে নির্দেশ করেছেন,আমি সেটি করবো এবং বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখবো।

টিএলসিএ রাসেল বলেন,আমার বাড়ি গুপ্তছড়া বাজার সংলগ্ন সে হিসাবে আমি তার সাথে গিয়েছি।টাকা নিয়ে থাকলেও আমি সেটা জানিনা।তার অপকর্মের বিষয়ে জানা থাকলে আমি যেতামনা।

Comments (০)
Add Comment