
চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকায় গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার চিহ্নিত প্রধান দুই আসামী কামাল উদ্দিন ও ইউসুফকে আটক করেছে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম।
বেশ কিছু দিন ধরে নিহত এনাম উদ্দিনের সাথে আসামী কামাল উদ্দিন ও ইউসুফের সাথে পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছিল।গত ১৯ই জুলাই রাত আনুমানিক ১১টায় এনাম বসত ঘরের কক্ষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কামাল উদ্দিন ও ইউসুফ তাদের দলবল নিয়ে দরজায় এসে এনামের নাম ধরে ডাকা-ডাকি করলে নিহত এনামের স্ত্রী রুনা আক্তার ঘরের দরজা খুলে এভাবে চিৎকার করে ডাকার কারণ জানতে চাওয়া মাত্রই তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে দুস্কৃতিকারীরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নিহত এনামের ঘরের ভিতর প্রবেশ করে লাঠি দিয়ে এনামের বুকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে।এক পর্যায়ে নিহত এনাম মাটিতে পড়ে গেলে তার স্ত্রী রুনা আক্তার কৌশলে ঘরের বৈদ্যুতিক লাইট বন্ধ করে দিলে এনাম আত্মরক্ষার্থে মাটি হতে উঠে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টাকালে এনামকে আটকানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দুস্কৃতিকারীদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র এবং বাহিরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অবস্থানরত অপরাপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা এনামের উদ্দেশ্যে করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষণ করে।তখন নিহত এনাম দিশেহারা হয়ে বাড়ির পার্শবর্তী জাহাঙ্গীরের বসত ঘরে প্রবেশ করে খাটের নিচে লুকিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে।কিন্তু ঘাতক পাষন্ড সশস্ত্র দুস্কৃতিকারীরা জাহাঙ্গীরের বসত ঘরে প্রবেশ করে খাটের নিচ হতে বের করে এনামের ডান বুকের উপর গুলি করলে মাটিতে পড়ে ছটপট করকে থাকে। পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বুকের উপর পা দিয়ে চাপ দিয়ে কপালে ও নাকের উপর গুলি করে যা মাথা ছিদ্র হয়ে মাথার বাম পাশের পিছন দিক দিয়ে বের হয়।
তৎক্ষণাত এলাকার লোকজন এনামকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে রাজারহাট বাজারে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আশিষ কুমার সরকারের কাছে নিয়ে গেলে তখন এনামকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত ঘটনায় নিহত এনামের ছোট ভাই বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-৭,চট্টগ্রাম ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে।এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭,চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ভোর চারটায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়োজিদ বোস্তামি থানাধীন ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন এলাকায় এবং চান্দগাঁও থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হতে উক্ত মামলার এজাহারভূক্ত অন্যতম প্রধান আসামী দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার মাইশাবাম এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার পুত্র কামাল উদ্দিন(৩৮) ও নুরুল ইসলামের পুত্র ইউসুফ(২৪)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আসামীরা নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা কান্ডের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।গ্রেফতারকৃত আসামীদের চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।