বিদ্যালয়ের দপ্তরী পদে চাকুরী নেওয়াকে কেন্দ্র করে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার।

0 ৭৮০,৮৮৩

বিদ্যালয়ের দপ্তরী পদে চাকুরী নেওয়াকে কেন্দ্র করে গুলি করে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আসাদুজ্জামান খান পিন্টুকে দীর্ঘ ১৭ বছর পলাতক থাকার পর র‌্যাব-৭,চট্টগ্রামের হাতে গ্রেফতার।

নিহত ভিকটিম মাহবুবুল হক(৪৫)ফেনী জেলার সোনাগাজী থানাধীন সাইবার হাট আলহাজ শফিউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৯৬ সাল হতে দপ্তরী পদে চাকুরী করতেন।পরবর্তীতে মাহবুবুল হকের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ হয় এবং প্রতিপক্ষ পার্টি ভিকটিমকে উক্ত চাকুরী ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে।মাহবুবুল হক উক্ত চাকুরী ছেড়ে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০০২ সালের ২২ এপ্রিল দুপুর আনুমানিক দুইটায় মাহবুবুল হককে সাইবার হাট আলহাজ শফিউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্বপার্শ্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বারংবার ছুরি দিয়ে বুকে এবং পিঠে আঘাত করে।

উল্লেখ্য যে,ঐ দিন খুন হওয়ার সময় উক্ত স্কুলে ভিকটিমের ৭ম শ্রেনীতে পডুয়া ছেলে ও ৯ম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে শ্রেনী কক্ষে উপস্থিত ছিলো।উক্ত অমানবিক ও পাশবিক চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সে সময় সারাদেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

উক্ত ঘটনায় মাহবুবুল হকের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া বাদী হয়ে ফেনী জেলার সোনাগাজী থানায় ১০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচারকার্য শুরু হয়।বিচারকার্য চলাকালীন সময়ে উক্ত মামলার অন্যতম প্রধান আসামী আসাদুজ্জামান খান পিন্টু আদালত হতে জামিন নিয়ে ২০০৬ সাল হতে আত্মগোপনে চলে যান। আসামীরা দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত পুলিশের তদন্ত এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য শেষে আসামীদের অনুপস্থিতিতে গত ২০১১ সালের ৩০ মে ভিকটিম মাহবুবুল হককে হত্যার দায়ে আসামী আসাদুজ্জামান খান পিন্টুসহ মোট ৫ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত এবং ৫,০০০/- টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান এবং ৫ জনকে খালাস প্রদান করেন।

র‌্যাব-৭,সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার জানান,বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রাম জানতে পারে যে,বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং এজাহারনামীয় ৩নং আসামী আসাদুজ্জামান খান পিন্টু আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মনামে ফেনী জেলার সোনাগাজী এলাকায় অবস্থান করছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ৩১ মে বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী আসাদুজ্জামান খান পিন্টুকে গ্রেফতার করে।গ্রেফতারকৃত আসাদুজ্জামান খান পিন্টু ফেনী জেলার সোনা গাজী থানার আওতাধীন সফরপুরের মৃত আইয়ুব খানের ছেলে।

পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত এবং ৫,০০০/- টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরো ০৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায়,ভিকটিম মাহবুবুল হককে  হত্যার পর সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মনাম ধারণ করে দীর্ঘ ১৭ বছর নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে মালয়েশিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পেশায় আত্মগোপন করে পুনরায় ফেনী এলাকায় বসবাস শুরু করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!