এমপি মিতা’র সন্দ্বীপ উন্নয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চল লাইসেন্স প্রাপ্তি সহ ৭ প্রকল্প চলমান

ইলিয়াস কামাল বাবুঃ অর্থনৈতিক অঞ্চল চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা জানালেন-২০ আগস্ট,বৃহষপতিবার,
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজার গভর্নিং বোডের সপ্তম সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী
করতে ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ও উৎসাহিত করতে শিল্পায়নের বিকল্প নেই।

এ জন্যে নতুন করে আরও ১০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছেন বেজার চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এ ১০ টি নতুন জোন গুলোর
মধ্যে সন্দ্বীপ অর্থনৈতিক অঞ্চল একটি।এ ছাড়াও সরকারের আর্থিক বরাদ্ধে আমি সন্দ্বীপে আরো ৭ টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পে হাত দিয়েছি,যার অনেকগুলো উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে আবার অনেকগুলোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে কিংবা চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা হয়,সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদর্শী সম্বৌধি চাকমার সাথে।তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন-সন্দ্বীপে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য সন্দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলের জাহাজ্যার চরের সন্দ্বীপ অংশের ৬ টি মৌজার ১৪ হাজার একর খাস জমি ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে।সরকারের এ ঘোষণায় সন্দ্বীপবাসীদের উন্নয়নে আরেকটি পালক যোগ হলো।

ফায়ার সার্ভিস স্টেশনঃ এ ছাড়াও চলতি বছরেই সন্দ্বীপে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এনাম নাহার মোড়ে নব নির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশন।

মুক্তিযোদ্ধা ভবনঃ একই ভাবে সন্দ্বীপ উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট সুদৃশ্য মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্ষ।

নতুন জেটিঃ সন্দ্বীপের সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের দীর্ঘদিনের
দুর্ভোগ লাঘবে গুপ্তছড়া ঘাটে নৌ পথের যাত্রী ওঠা নামার সুবিধার্থে বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্যোগে ৪৭ কোটি
টাকা ব্যয়ে দশমিক ৬ কিমি দৈর্ঘ্যের নতুন নির্মাণাধীন আরসিসি এ জেটি’র কাজ প্রায় ৯৭ ভাগ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান।যা রাতের বেলায়ও ব্যবহারযোগ্য হিসেবে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ সংযোগে লাইটিং করা হয়েছে।যে জেটি’র ইতিমধ্যেই নামকরন করা হয়েছে দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমান জেটি নামে।

নতুন নৌ যান এ জন্যে দিনে ও রাতে এ জেটি ব্যবহার করে চলাচলের জন্য ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০ আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক একটি নৌ যান নির্মানের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

বিদ্যুৎঃ ১৩৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৩/১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সন্দ্বীপ জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুতে আলোকিত হয়ে ওঠে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর বিকেল ৩ টায়।সেই থেকে সন্দ্বীপের বিদ্যুৎ খাতে আরো ৩০০ কোটি সরকারী বরাদ্ধ থেকে বর্তমানে ফেইজ-১ এর কাজ পৌরসভা সহ সন্দ্বীপের ১৩ টি ইউনিয়নে চলমান রয়েছে।এ ছাড়া ফেইজ-২ এর আওতায় আজিমপুর ও রহমতপুর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের কাজ অচিরেই শুরু হবে।এ জন্যে ১০০০ বৈদ্যুতিক খুটি এরই মধ্যে সন্দ্বীপ এসে গেছে এবং আরো ৪০০০ খুটি আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।এ ছাড়া তালতলীতে আরো একটি নতুন ৩৩ কেভি সা স্টেশনের কাজ নির্মানাধীন রয়েছে।প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.রায়হান আশা করছেন ২০২১ সালের মধ্যেই সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ এর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

দেলোয়ার খাঁ সড়কঃ ৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সন্দ্বীপের উত্তর দক্ষিণের ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দেলোয়ার খাঁ সড়কের আরসিসি ও কার্পেটিং সহ প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।বাকী ৪০ শতাংশের কাজ বর্ষা শেষেই শুরু হবে প্রকল্প অফিসের সাইট ইঞ্জিনিয়ার নারায়ন বাবু জানিয়েছেন।

সিসি ব্লক বেড়িবাঁধঃ মোট ৭ টি প্যাকেজে ১৯৭ কোটি ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সন্দ্বীপে পোল্ডার নং ৭২ এর নতুন বেড়িবাঁধ তৈরীর কাজ চলমান রয়েছে সন্দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের মগধরা,সারিকাইত ও রহমতপুর ইউনিয়নে। ৯.৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নান্দনিক সিসি ব্লক বেড়ি বাঁধের কাজ ও ১.২ কিলোমিটর মাটির বেড়িবাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান এক প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার মো.হাফিজুর রহমানের সাথে।তিনি জানালেন বর্ষা ও করোনার কারনে সন্দ্বীপে যথাসময়ে কাজ শেষ করা যায়নি।সন্দ্বীপে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসও হেডকোয়ার্টার্স আরিফুল ইসলাম বলেন বর্ষার পূর্বে সারিকাইতের ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের সওদাগর হাট ও বাংলাবাজার এলাকার ১.০২ কিলোমিটার মাটির বেড়িবাঁধ তৈরীর কাজ যথাযথ ভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় এ এলাকা দিয়ে সাগরের পানি ঢুকেছে।যা স্থানীয় চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনিরও স্বীকার করেন।একই ভাবে মগধরার ছোঁয়াখালী এলকার বেড়ীর উত্তর অংশ ভাঙ্গা থাকায় সেখান দিয়েও সাগরের পানি প্রবেশ করছে।ফলে মানুষ কে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।প্রকল্প মেয়াদে কথা ছিলো প্রাকৃতিক দুর্য়োগ ও ঝড় জলোচ্ছ্বাসের কবল হতে প্রকল্প এলাকা সংরক্ষন,বন্যা প্রতিরোধ ও লবনাক্ত পানির প্রবেশ রোধ কল্পে সন্দ্বীপের ৭২ নং পোল্ডারের কাজ ঠিকাদারগন দ্রুত শেষ করবেন।কিন্তু কার্যাদেশের এই শর্ত মানা হয়নি।

এতো সব সত্বেও চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই সন্দ্বীপের মেগা প্রকল্প গুলোর উন্নয়ন কাজ জনস্বর্থে সু-সম্পন্ন করা হবে এবং মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে সন্দ্বীপবাসী এটাই প্রত্যাশা করে।

Comments (০)
Add Comment