উপজেলা সন্দ্বীপে অবৈধ ইটভাটা,ঝুঁকিতে পরিবেশ,প্রশাসনের নিরব ভূমিকা পালন।

পরিবেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধারা ইউনিয়নে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ ১৩টি ইটভাটা।পাশেই লোকালয়,দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

কয়লা দিয়ে এসব ইটভাটা গুলোতে ইট পোড়ানোর কথা থাকলেও খরচ সাশ্রয়ের জন্য সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অনেকেই নির্ভয়ে প্রকাশ্যেই পোড়াচ্ছে কাঠ।এসব ভাটাগুলো পড়েছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ও ভাটার ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,ইটভাটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে এসব ইটভাটার কর্মকাণ্ডে জড়িতরা বেশির ভাগই প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকটা দেখেও না দেখার ভান করে আছেন স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।

এগুলোতে চুরি করে কাঠ পোড়ানো হয়।এসব ইটভাটার তাপে নারিকেল গাছের ফল ছোট হয়ে গেছে।গাছগুলো লাল হয়ে যাচ্ছে।লোকালয়ের মধ্যে থাকা ভাটায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের ফসলের।মাঝে মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন আসেন।কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পরপরই ভাটা আবার চালু হয়ে যায়।তা ছাড়া বেশির ভাগ ইটের ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে কম উচ্চতার টিনের চিমনি।ইট ভাটার ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে,সন্দ্বীপ উপজেলার মগধারা ইউনিয়নের আশপাশের ও নদীর তীরের আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গ্রামের পাশেও রয়েছে ভাটা।এসব ইটভাটায় কয়লার পাশাপাশি পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।

সন্দ্বীপ উপজেলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে,এক ইউনিয়নের ১০টি ইট ভাটায় একধারে চলছে কাঠ ও কয়লা পুড়িয়ে ইট তৈরির কাজ।১টি ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তের অনুমোদন থাকলেও বাকিগুলো চলছে বিনা লাইসেন্সে।একটা ভাটাও পুরোপুরি আধুনিক না হওয়ায় ও প্রশাসনের নজর না থাকায় সেখানে চুরি করে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।

এইসব অবৈধ ইটের ভাটার মধ্যে রয়েছে রয়েল/মেম/মেক্স/বি,বি,সি/ইয়েস/এ,ডি,বি/ এ,টি,টি/তাজ/জি,আর,এম/আকাশ।এগুলোর কোনটার অনুমোদন নেই।

কাগজপত্রের ব্যাপারে প্রশ্ন করলেই সবাই এক কথায় বলেন সবকিছুই সভাপতি জানেন।আর এই ইট ভাটা ১৩টাই চলে আনোয়ার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে।এইসব ইটের ভাটা চালানোর জন্য ১৩জন মালিক মিলে একটা সংগঠন করে আর সেই সংগঠনের সভাপতি মগধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার চেয়ারম্যান।

এই বিষয়ে মগধারার চেয়ারম্যান আনোয়ার জানান,আমি আগে ইট ভাঁটা মালিক সমিতির সভাপতি ছিলাম কিন্তু এগুলো আমি অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি।আমার ইট ভাঁটার কাগজপত্র জমা দিয়েছি তবে এখনো অনুমোদন পায়নি।

ইটের ভাটা সম্পর্কে সন্দ্বীপ থানার অফিসার্স ইনচার্জ বশির আহমেদ জানান,এটা আমাদের বিষয় না,এগুলো পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইউনো সাহেবের দেখার বিষয়।উনারা ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করলে আমি থানা থেকে পুলিশ দিবো।এই ছাড়া আমার কিছু করার নেই।

ইটের ভাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান,আমি নতুন জয়েন করছি এখনো এই সব বিষয়ে কাজ করার সুযোগ হয় নাই।বিষয়টি আমি দেখবো।

ইটের ভাটা সম্পর্কে এসিল্যান্ড মাঈন উদ্দিন জানান,সন্দ্বীপে আমি নতুন,তবে আস্তে আস্তে বিষয় গুলো কাজ করবো।

ইট ভাটার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তা বলেন,আমরা ব্যবস্থা নিবো খুব তাড়াতাড়ি।ইতিমধ্যেই জেনেছেন সারা দেশে অবৈধ ইটে ভাঁটার উপর অভিযান চলছে।পর্যায়ক্রমে সন্দ্বীপেও অভিযান চলবে।

Comments (০)
Add Comment