চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চলছে দখল বাণিজ্য।

চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(সিডিএ)।কিন্তু দখলদারদের কবলে পড়ে সেই সৌন্দর্য এখন ম্লান হতে চলেছেসমুদ্রদর্শনে আসা ভ্রমণপিপাসুরা পড়ছেন বিড়ম্বনায়।

সরেজমিন দেখা গেছে,পতেঙ্গা সৈকত থেকে নারিকেল তলা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক দোকান।

এসব দোকান নির্মাণে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ভূমিকা রাখছেন।চাঁদাবাজ চক্র দোকানগুলো থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া এসব অবৈধ দোকান ঘিরে চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ।পতেঙ্গা থানার কতিপয় পুলিশ সদস্যের প্রশ্রয়ে চাঁদা ভাগবাটোয়ারা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা জানান,চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং সড়ক থেকে সমুদ্রের দিকে নামতেই ৩০ ফুট প্রশস্তের হাঁটাপথ ছিল উন্মুক্ত।এরপরেই চোখে পড়তো বাগানের রং-বেরঙের বর্ণিল নানা ধরনের ফুল।এখন দোকান নির্মাণ করার জন্য বেশ কিছু গাছ ও ঘাস কেটে ফেলা হয়েছে।বসার জন্য হাজারো আসন থাকলেও পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।সৈকতে হাঁটা কিংবা সমুদ্রের নোনা পানি ছোঁয়ার স্বাদ পূর্ণ করা কঠিন।

সিডিএ সূত্র জানায়,সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ জোন-১ এবং জোন-২ এ বিভক্ত করা হয়েছে।জোন-১ এর অধীনে ৫ কিলোমিটার হাঁটাপথ,বয়স্ক ও শিশুদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র এবং কিডস জোন,বিভিন্ন ধরনের মেকানিক্যাল ও নন-মেকানিক্যাল রাইডের কাজ হচ্ছে।এছাড়া সুসজ্জিত বাগান এবং ক্যাবল কারের সংস্থান করা হচ্ছে।এর সঙ্গে থাকছে বোটিংয়ের জন্য জেটি ও কার পার্কিং।আলোকসজ্জার মাধ্যমে রাতের সমুদ্রদর্শনের জন্যও থাকছে নানা আয়োজন।জোন-২ অঞ্চলে সৌন্দর্যবর্ধন,হোটেল-মোটেল,আধুনিক মানসম্পন্ন প্লাজা,সুসজ্জিত বাগান এবং টয় ট্রেনের ব্যবস্থা থাকবে।

প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হচ্ছে।এই রাস্তা নির্মাণে পতেঙ্গা এলাকায় রাস্তা ও বাঁধ নির্মিত হয়েছে।প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে দখল বাণিজ্য নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও।

সিডিএর কর্মকর্তারা বলছেন,প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান।সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও শেষ হয়নি।এ অবস্থায় সৈকত এলাকায় দোকান বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিডিএর।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন,পতেঙ্গা এলাকায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।পুরো এলাকা দখলদারমুক্ত করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

Comments (০)
Add Comment