যশোরের মণিরামপুরে গুদামে পচা সেই ৫৫ বস্তা চালের ভবিষ্যত কি?

হাফিজুর শেখ মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: করোনাকালে দুস্থদের মাঝে বিতরণ না করে মণিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে পচানো সেই ৫৫ বস্তা দুই দশমিক ৭৩ টন (দুই হাজার ৭৩০ কেজি) চালের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানাতে পারেননি উপজেলা প্রশাসন। যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজের পর গেলো ৩১ অক্টোবর চালগুলো জব্দ করে পরিষদেরই একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান। জব্দের একমাস পার হলেও বিপুল পরিমাণ এ চালের ভবিষ্যত এখন অনিশ্চিত। পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আব্দুল হককে কি সমপরিমাণ চাল কিনে দিতে হবে না সরকারি সম্পদ নষ্টের দায়ে তাকে আইনের মুখামুখি হতে হবে সেটাও নিশ্চিত নয়।

এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ‘এখানে আমার সিদ্ধান্ত দেয়ার কিছু নাই।’
এ চালের ভবিষ্যত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক এ ব্যাপারে বলতে পারব না।’
এদিকে খেদাপাড়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পরিষদের পচে যাওয়া চালের ব্যাপারে ইউএনওর সাথে কথা বলেছি। ১৬ ডিসেম্বরের পর তিনি একটা সিদ্ধান্ত দিতে চেয়েছেন।
গেলো জুলাই মাসে করোনাকালীন দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য উপজেলার সব চেয়ারম্যানদের চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। গত আগষ্ট মাসের প্রথম ও শেষ সপ্তাহে দুইধাপে ৫৫ বস্তা চাল তোলেন খেদাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হক। পরে চাল বিতরণ না করে পরিষদের গুদামে রেখে দেন চেয়ারম্যান। ওই পরিষদের সচিব মৃনালকান্তিও চাল বিতরণে উদ্যোগী হননি। ফলে খোলা বাতাসে চালে পচন ধরে। গেল ৩০ ও ৩১ অক্টোবর গণমাধ্যমে এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। জানাজানি হলে ৩১ অক্টোবর সকালে ৩০০-৪০০ নারী পুরুষকে পরিষদে জড়ো করে পচা চাল বিতরণের চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান ও সচিব। খবর পেয়ে ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান পরিষদে হাজির হয়ে চাল জব্দ করেন। সেই থেকে চালগুলো পরিষদে তালাবদ্ধ রাখা আছে।
তখন বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিত আকারে জানানো হয়েছিল বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি ওই পর্যন্ত থেমে আছে বলে জানায় সূত্রটি।
এদিকে একাধিক সূত্র বলছে, শুধু দুস্থদের চাল নয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে লকডাউনে থাকা ব্যক্তিদের সাহায্যে উপজেলা প্রশাসনের দেয়া অন্তত ২০০ কেজি চাল পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ওই পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষের পাশের কক্ষে। এছাড়া সচিবের কক্ষের পিছনের কক্ষে বিতরণ না করে শিশুখাদ্য (দুধ) ফেলে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে। তদন্ত সাপেক্ষ এসব বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।

Comments (০)
Add Comment