যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কাজে ফিরেছেন হাসপাতালের সেই ১১ পরিচ্ছন্নকর্মী

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: দাবি আদায় ছাড়ায় কাজে ফিরেছেন মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১১ পরিচ্ছন্নকর্মী।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে তারা কাজে নিয়মিত হয়েছেন।
এরআগে চার হাজার টাকা পারিশ্রমিকের দাবিতে গেলো শনিবার কাজ না করার ঘোষণা দেন এ ১১ জন। পরে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে দাবির ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও কাজ হারানোর ভয়ে সবাই আবার কর্মস্থলে এসেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ওদের মধ্যে ছয়জন নিয়মিত ছিলো। পাঁচজন দুইদিন আসেনি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। টাকা হাতে পেলেই তাদের দাবি পূরণ করা হবে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ডবয় আশীষ কুমার বলেন, জরুরি বিভাগে লোকজন কম। যদি বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যায়। এ জন্য সোমবার থেকে হাসপাতালে আসছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচ্ছন্ন কর্মী বলেন, আমরা আড়াই হাজার টাকা করে পাই। তাও ঠিকমতো দেয় না। এতে চলে না। সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের কাছে দাবি করেছিলাম। উনি রাজি হওয়ায় মাঝে ৩-৪ মাস চার হাজার টাকা করে পাইছি। পরে আবার বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, চার হাজার টাকা পারিশ্রমিকের দাবি নিয়ে গত শনিবার সবাই একসাথে টিএইচও’র কাছে গিয়েছিলাম। তিনি সাঁড়া না দেয়ায় ওই দিন আমরা কাজ বন্ধ করে চলে যাই। পরে সরকারি পরিচ্ছন্নকর্মী নয়ন ৩-৪ জনের সাথে যোগাযোগ করে ওদের চার হাজার টাকা করে দেয়ার লোভ দেখায়। লোভে পড়ে কয়েকজন ডিউটি করেছেন। আমরা শুনিছি, চারজন রেখে বাকিদের বাদ দেবে। দাবি আদায় না হলেও কাজ হারানোর ভয়ে আবার আসছি। টিএইচও ম্যাডামের কাছে মাপ চেয়ে কাজে যোগ দিয়েছি।
মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ওদের মধ্যে ছয়জন নিয়মিত ছিলো। পাঁচজন দুদিন আসেনি। এখন সবাই কাজ করছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সামর্থ্য কম। বহির্বিভাগে রোগীদের টিকেটের আয় থেকে ওদের পারিশ্রমিক দিতে হয়। রোগী কম আসায় এখন হাসপাতালের আয় কমেছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নাজমা খানমের সাথে কথা হয়েছে। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। টাকা হাতে পেলেই তাদের দাবি পূরণ করা হবে।
মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, হাসপাতাল প্রধানের সাথে কথা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ থেকে হাসপাতালে বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ আছে। নতুন যারা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছেন। তারা শপথ নিলে প্রথম সভায় বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবো।
৫০ শয্যার মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি একজন পরিচ্ছন্নকর্মী ছাড়া কোনো আয়া নেই। ৪-৫ বছর আগে রেজুলেশনের মাধ্যমে হাসপাতালে ১১ জন আয়া ও ওয়ার্ডবয় নিয়োগ দেন কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে তারা নামমাত্র পারিশ্রমিকে দৈনিক ছয় ঘন্টা করে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন।

Comments (০)
Add Comment