যুক্তরাষ্ট্র থেকে শেকল পড়িয়ে আরও ৩১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠালো।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

ফেরত আসা কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, যাত্রাপথে প্রায় ৬০ ঘণ্টা তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ ও শরীরে শেকল পরিয়ে রাখা হয়েছিল। ঢাকায় বিমানবন্দরে নামার পর তাদের শেকলমুক্ত করা হয়। নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় এমন অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের জরুরি সহায়তা এবং বাড়ি ফেরার জন্য পরিবহন সুবিধা দেওয়া হয়। জানা গেছে, ফেরত আসা ব্যক্তিদের বেশিরভাগই নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা। এছাড়া সিলেট, ফেনী, শরীয়তপুর ও কুমিলস্না জেলার বাসিন্দারাও রয়েছেন এই দলে।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ফেরত আসা ৩১ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের মধ্যে অন্তত সাতজন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে প্রথমে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। সেখানে বসবাসের আবেদন নাকচ হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

শরিফুল হাসান বলেন, নথিপত্রহীন কাউকে ফেরত পাঠানো হয়তো স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া হতে পারে, কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাতে হাতকড়া ও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখার ঘটনাটি অমানবিক। তিনি আরও উল্লেখ করেন, একেকজন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে দেশ ছেড়েছিলেন, কিন্তু ফিরছেন শূন্য হাতে।

ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর নামে যারা মানবপাচারের এই পথ তৈরি করেছে, সেই এজেন্সি এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান শরিফুল হাসান। তিনি সরকারকে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার আগে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৫৭ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হলো। এর আগে ২৮ নভেম্বর ৩৯ জন, ৮ জুন ৪২ জন এবং বছরের শুরুতে একাধিক ফ্লাইটে আরও অন্তত ৩৪ জনকে একইভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এদের অধিকাংশকেই হাতকড়া ও শেকল পরিয়ে দেশে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

Comments (০)
Add Comment