লক্ষ্মীপুরে ফেইসবুক লাইভে এসে আদালতে যুবকের আত্নহত্যা

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে এই প্রথম মায়ের উদ্দেশ্যে ফেইসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেছেন রাকিব হোসেনে (২৭) নামের এক যুবক। বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে।আদালত ভবনের পাঁচ তলার ছাদ থেকে লাফ দেন রাকিব হোসেন।পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রাকিবকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা যায়,রাকিব লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর মজুপুর এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী।পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ব্যস্ত আদালতে হঠাৎ একটি শব্দ শুনতে পায় আদালতে উপস্থিত লোকজন। পরে তাৎক্ষণিক দেখতে পায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের সামনে এক যুবক মাটিতে পড়ে আছে। এ সময় আদালতে উপস্থিত থাকা লোকজন ভীড় জমতে থাকে।এ খবর শুনার সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ পুরো লক্ষ্মীপুর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা খবর সংগ্রহ করে প্রচার করতে থাকেন। নিহত রাকিবের বড় ভাই সোহেল হোসেন জানান, পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে সকালে রাকিবকে বকা দেওয়া হয়। পরে সে দোকান থেকে অভিমান করে বের হয়ে চলে যায়।এরপর রাকিব আত্মহত্যা করেছে বলে শুনতে পাই। পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক কিশোর কুমার জানান, আদালত ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রাকিবের মৃত্যু হয়েছে। লাশ মর্গে রয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এঘটনার আধা ঘণ্টা পূর্বেই নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে (রাকিব হোসেন রোমান) ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা দেন রাকিব। ভিডিওতে তার মা-বাবার কাছে ভুল ত্রুটির ক্ষমা চেয়ে আত্মহত্যা করে। সেখানে তিনি বলেন, ‘মা আই সজ্ঞানে মইরতে যাইতাছি। আই তামা চুরি করি ন মা। জীবনে অনেক ভুল কইরছি মা। আর মৃত্যুর লাই কেউ দায়ী নাই। আই নিজের ইচ্ছায় যাইতাছি মা। অনেক ভুল কইরছি মা। একটা মাইয়ার জীবনও নষ্ট কইরছি। আইয় সুমাইয়ারে বিয়া কইরছি। বিয়া করি সুখী হইতে পাইরতাছি না। আর কইলজা হাডি যা। আর অ্যাকাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে মা। সোহেল ভাইয়ের তন তামা চুরি কইরছি, হেতেনে জানে। হেতেনের তন হেগুন লন লাইগতো ন। বাড়ির ড্রয়ারের মধ্যে আর এটিএম কার্ড আছে।’ মায়ের উদ্দেশ্যে রাকিব হোসেন এটিএম কার্ডের পিন নম্বরও বলেছেন ফেইসবুকে লাইভের ভিডিওটিতে।

Comments (০)
Add Comment