শার্শায় নবজাতককে হত্যা মামলায় জবানবন্দি দেওয়ার পর মা-নানি কারাগারে

 শার্শা যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শায় নবজাতককে হত্যার অভিযোগের মামলায় পৃথক দুটি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শিশুটির মা মাছুরা বেগম ও নানি কদভানু।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে মাছুরা বেগম এবং জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসানের আদালতে কদভানু জবানবন্দি দেন। এরপর মা ও নানিকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারকেরা
জেলা পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শার্শা উপজেলার পান্তপাড়া গ্রামের মধ্যপাড়া মাঠের মধ্য কাওসার আলীর পরিত্যক্ত পুকুর থেকে দুইদিন বয়সের এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় লাশটির মাথায় রক্তাক্ত জখম ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে শার্শা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর মা ও নানিকে আটক করে পিবিআই।
জানা যায়, আটক মাছুরা বিধবা হয়েও পরকীয়ায় জড়ালে অসাবধানতাবশত তার গর্ভে সন্তান আসে। সন্তান জন্মদানের পর লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিতে শ্বাসরোধে হত্যার পরে পুকুরে ফেলে দেয়। মাছুরা জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ গ্রামের মৃত মনু মিয়ার স্ত্রী এবং কদভানু মৃত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী।

প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত শেষে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয় আদালত।
পিবিআইয়ের এসআই মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, শিশুর মা মাছুরা বেগম রাস্তার পিস ঢালাইয়ের কাজ করতো। বছর দুই আগে সিলেটে রাস্তার কাজ করতে গেলে সেখানে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর জেরে সেই ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়। ওই সময় মাসুরা গর্ভবতী হয়। এরপরে সেখান থেকে যশোর জেলার শার্শা থানাধীন জেলেপাড়া গ্রামে জনৈক ইসমাইলের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকে। একপর্যায়ে মাছুরার গর্ভাবস্থার কথা পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হয়। পরে মাছুরা জেলেপাড়া গ্রাম থেকে চলে আসে শার্শা থানাধীন পান্তাপাড়া গ্রামের জনৈক সিদ্দিকের বাড়িতে। সেখানে আসার চারদিন পরই তিনি সন্তানের জন্ম দেন।

সোমবার দুপুরে শার্শার হাজিরবাগ থেকে মাছুরা ও তার মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিন তাদের যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে দুজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

Comments (০)
Add Comment