আল বারাকা মাল্টিপারপাসের গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদ ও অর্থ ফিরিয়ে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত।

সন্দ্বীপ গুপ্তছড়া বাজার আল বারাকা মাল্টিপারপাসের গত দুই বছর যাবৎ ধারাবাহিক গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদ ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আমানত ফিরিয়ে পাওয়ায় দাবিতে শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক গুপ্তছড়া বাজার আল বারাকা ভবনের সামনে মানববন্ধন করছে।

মানববন্ধনে তাদের কষ্টে অর্জিত টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সমবায় কতৃপক্ষ উপজেলা প্রশাসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ভুক্ত ভোগী গ্রাহকেরা।মানববন্ধনে ভুক্ত-ভোগী গ্রাহকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যাদব মজুমদার,যতিন্দ্র মজুমদার,জন্টু মজুমদার,রাধালাল,বাবুল চন্দ্র,ধনশ্বর,জামাল উদ্দিন, মনির সওদাগর,আবুল কালাম,শংকর মজুমদার,এমলাক,অরুন চন্দ্র,কুসুম কলি,আলোরানী,নুরজাহান বেগম,অনিমা রানী,ইয়াসমিন,লিপি রাণী,সন্ধ্যা রাণী,কানন মজুমদার,রচনা বালা,নিত্য লাল,আয়েশা বেগম, শাহেনা বেগম,সাধন মজুমদার,রুনা বেগম সহ আরো অনেকেই।

ভুক্ত-ভোগীদের মধ্যে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন,তারা বলেন তিল তিল করে মেয়ের বিয়ের জন্য জমিয়েছেন টাকা,মেয়ের বিয়ে ঠিক হলো,আল বারাকা মাল্টিপারপাসের কাছে টাকা চাইতে গেলে এক বছর ধরে তারা ঘুরাচ্ছে,টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছে না মেয়েকে।ভুক্ত-ভোগীরা আরও বলেন আমাদের টাকা নিয়ে তারা ধোপার হাটে ভবন নির্মান ও কাটাখালী বেড়িবাঁধে ইটভাটা করছে।

গ্রাহকের টাকা নিয়ে গরিমসি আল-বারাকা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ মাসে ১৫শ টাকা মুনাফা দেওয়ার ২০১২-১৬-১৯ মোট ১৩টি এফডিআর চুক্তিতে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে পাঁচ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন কৃষক হিরন্ড মজুমদার।তার এফডিআর নাম্বার ৩১৯-৪৭৩-৭৩৩।
কিন্তু মুনাফা দূরের কথা,এখন আসল টাকাই ফেরত পাবেন কি না সে চিন্তায় তার রাতের ঘুম হারাম।

গুপ্তছড়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট সালাউদ্দিন গত কয়েক বছর আগে প্রতিদিন পাঁচ শত টাকা করে রেখেছেন এখন তিনি পাবেন মোট চোদ্দ লাখ টাকা।
শুধু কি হিরন্ড ও সালাউদ্দিন,গুপ্তছড়া মার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী মনির সওদাগর,সোহেল সওদাগর নিজাম সওদাগর সহ অসংখ্য মানুষের জমা রাখা কোটি কোটি টাকা নিয়ে জমা কৃত আল বারাকা মাল্টিপারপাসের কো-অপারেটিভ সোসাইটি।মুনাফার আশায় টাকা জমা রেখে এখন অফিসের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন গ্রাহকরা।জমা দেওয়া আমানত ফেরত পাবেন কি না-তা নিয়ে শংকা-উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

এদিকে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো গ্রাহকদের শুধু আজ নয় কাল এভাবে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছেন । এতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সম্প্রতি আল বারাকা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজারের ব্যক্তিগত অফিস ঘেরাও করেন।এ সময় গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।তাকে টানাহেঁচড়াও করেন গ্রাহকরা।আল বারাকা মাল্টিপারপাসের গ্রাহকের টাকা কেমন অফিসের আশপাশের ৩ টি হিন্দু বাড়িতে সরোজমিনে গেলে একাধিক গ্রাহক তাদের ডিপিএস এফডিআর এবং একাউন্টের বই বের করে দেখান,যা সব একাউন্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ,মধ্য কালী বাড়ী মগধরা ১ নং ওয়ার্ড
এফডিয়ার নং ৮৬১ বিশ হাজার,৮৬৫ ত্রিশ হাজার, ৯০৭ আলো রানী চল্লিশ হাজার,৫৯৭ অনিমা রানী পয়ত্রিশ হাজার,৭২৭ পনের হাজার,৭০৩ কানম মজুমদার ২০ হাজার,৭৩৫ কানন মজুমদার ২ লাখ, ৪২৫ অরুণ মজুমদার এক লাখ,৭৫০ পুষ্প রাণী এক লাখ ৭০ হাজার,১৮৪৭ মিতা রানী ৬০ হাজার,৬৪২ ঝর্না রানী,দশ হাজার, ৫৫৯-৮৫৪ রচনা বালা ৫৫ হাজার, ৬৮৭ কণিকা রাী বিশ হাজার,ডিপিএস ১৯৭৩ ছকিনা বেগম ৮০ হাজার,রসিক কবিরাজের বাড়ী হারামিয়া ৭ নং ওয়ার্ড ৩১৯-৪৭৩-৭৩৩ হিরন্ড মজুমদার টোটাল পাঁচ লক্ষ টাকা,৫৬২ লিপি রাণী ১ লক্ষ টাকা,৪১২ যতিন্দ্র মজুমদার ১ লক্ষ,বাবুল দাস হারামিয়া ৫ লাখ, রাধানাথ হারামিয়া ৫ লক্ষ ৭০ হাজারবজলাল হারামিয়া ৫১ লক্ষ, মনির সওদাগর ১ লক্ষ ৫০ হাজার,কুসুম কলি ৫ লক্ষ,উত্তম মগধরা ১ নং ওয়ার্ড ২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা।

ভুক্তভোগীরা জানান,২০০৮ সালে গুপ্তছড়া বাজারে কার্যক্রম শুরু করে আল বারাকা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি।শুরু থেকর এক পর্যায়ে ২ হাজার গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করে এই প্রতিষ্ঠানটি।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক বাদশা বলেন,লাখে ১৫শ টাকা মুনাফা দেওয়ার কথা।এখন মুনাফা দুরে থাক আসল টাকা পাব কিনা সে দুচিন্তা আছি,এখন আমরা কি করবো বুঝতে পারছি না।আমাদের মোট আট লক্ষ টাকা জমা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ফাস্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানোজার সোহরাব শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল নাম্বার বন্দ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সামছুদ্দীনের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায় নাই।

সহকারী সমবায় পরিদর্শক গোলাম রহমান বলেন, ‘আল বারাকা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।গত কয়েক বছর তাদের কোন অডিট হয় না,অডিটের বিষয়ে বললে ও তারা পাত্তা দিচ্ছেন না ।

এই বিষয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন,এ ব্যাপারে আমি এখনো লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি,অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়া হবে।

Comments (০)
Add Comment