খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে বৈসু সাংগ্রাইং বিঝু ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন।

পাহাড়ে লেগেছে বৈসাবী হওয়া।তাইতো বৈসাবীর আনন্দে মেতেছে পাহাড়বাসী।খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবী উৎসব। মঙ্গলবার সকালে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে শান্তির প্রতিক সাদা পায়রা ও রঙিন বেলুন উঠিয়ে র‌্যালীর উদ্বোধন করেন উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

 

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন,খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ায় জাহাঙ্গীর আলম ,জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস,পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ,পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী,জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বশিরুল হক ভূঞা,টিটন খিসা,প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ,খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় দাস,পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল সহ বিভিন্ন সামরিক বেসামরিক নেতৃবৃন্দ ও জেলা পরিষদ সদস্যসহ বিভিন্ন জাতী সম্প্রদায়ের মানুষ। র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পৌর টাউন হলে গিয়ে ডিসপ্লেতে মিলিত হয়।

 

নদীতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে মঙ্গলবার(১২ এপ্রিল) পাহাড়ে জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব শুরু হওয়ার কথা থাকলেও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালির মধ্য দিয়ে উৎসবে রং ছড়িয়ে পড়েছে। বর্ণিল পোষাকে নানা বয়সের তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে ব্যালীতে আনন্দে মেতে উঠে।বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে মুখোরিত হয়ে উঠেছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। পরে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গনে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়।

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন,বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সু-দুঢ় হবে।সে সাথে সকল ভাষাভাসীর মেলবন্ধনে পার্বত্য জেলা শান্তির নিবাসে পরিণত করতে সকলের আন্তরিকতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

এদিকে ১২ এপ্রিল চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বৈসাবি। সকালে চেঙ্গী,মাইনী ও ফেনী নদীতে ফুল ভাসানো হয়।১২ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের ফুল বিঝু,চেঙ্গি নদীতে ফুলভাসাতে গিয়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

 

১৪এপ্রিল পহৈলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা।একই দিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন।সেই সাথে সব বয়সী মানুষ নদী খাল অথবা ঝর্ণায় গঙ্গা দেবীর পূজা আরাধনা করা হবে।১৪ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব এবং বাংলা নববর্ষের র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে পাহাড় এখন আনন্দের জেয়ারে ভাসছে।

 

প্রসঙ্গত,ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু,মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিঝু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে।এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরতরা মিলেমিশে ‘বৈসাবি’র নাম করণ করে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।

Comments (০)
Add Comment