পাবনা সুগার মিল বন্ধের সিদ্ধান্তে, শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত

0 ২৩৮

ঈশ্বরদী প্রতিনিধিঃ আখ সংকটে ধুঁকে ধুঁকে চলেছিল পাবনা চিনিকল। তার ওপর রাষ্টায়ত্ত চিনিকল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এমন খবরের প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শ্র্রমিক-কর্মচারী সংগঠন। শনিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় পাবনা সুগার মিলস্ লিঃ এর প্রধান ফটকের সামনে পাসুমি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এবং আখচাষী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। দেশের সুগার মিল গুলোর ক্রমবর্ধমান লোকসান ঠেকাতে ১৬ টি সুগার মিলের মধ্যে ৬টি সুগার মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশন। বন্ধের তালিকায় পাবনা সুগার মিল ছাড়াও কুষ্টিয়া, সেতাবগঞ্জ, রংপুর, শ্যামপুর ও পঞ্চগড়ের সুগার মিল মিল রয়েছে। এ বন্ধ প্রক্রিয়ার মধ্যে পাবনা সুগার মিলস্ লিঃ চিনি কলের নাম আসায় মিল সচল রাখতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ আখচাষী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত চাষী সাজাহান আলী বাদশার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম খাঁন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আতিয়া ফেরদৌস কাকলি, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ বকুল, ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ন আহবায়ক মুরাদ মালিথা, ছলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা, পাবনা আঞ্চলিক শ্রমিক ফেডারেশন নেতা ইব্রাহিম হোসেন, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার, পাবনা সুগার মিলের সাবেক সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আসাদুর রহমান বিরু, যুবলীগ নেতা দোলন বিশ্বাস, পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সা তাঁদের দাবী সরকারের ৬টি চিনিকল বিরাষ্ট্রীয়করন প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। কারন সুগার মিল বন্ধ হলে শ্রমিক কর্মচারিদের না খেয়ে পথে বসতে হবে। তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে সুগার মিলগুলো বন্ধ না হয়। বাংলাদেশ আখচাষী ফেডারেশনের সভাপতি সাজাহান আলী বাদশার বলেন, ইতিমধ্যে সরকার দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শিল্প মন্ত্রনালয় তালিকা দিয়ে সরকারকে সুপারিশ করেছে মিলগুলো বন্ধ করার জন্য। সেই তালিকায় পাবনা সুগার মিল রয়েছে। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের পাওনার হিসাব করেছে সরকার। আসলে পাওনা মিটিয়ে দিলে শ্রমিকরা আগামিতে কি করবে এটা আগে সরকারকে ভাবতে হবে। পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন বলেন, এই সুগার মিল আমাদের প্রান। আন্দোলন করতে গিয়ে যদি রক্তাক্ত হতে হয় তাহলে আমি মিছিলের সামনে থাকবো। বুলেট ছুড়লে প্রথমে আমি বুক পেতে দিবো। পাবনা সুগার মিলের সকল শ্রমিককে আগামি দিনে যদি বৃহত্তর আন্দোলন হয় তাহলে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহবান জানান তিনি। পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, গত সাত মাস এই মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়নি। প্রায় সাড়ে ছয়শ’ শ্রমিক-কর্মচারী বেতন বাবদ মিলের কাছে সাড়ে ছয় কোটি টাকা পাবে। এ পরিস্থিতিতে মিল বন্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তারা হতাশ। আগামি দিনে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহবান জানান তিনি। পরে শ্রমিকরা স্লোগান দিয়ে সুগারমিলের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে। পাবনা সুগার মিলের প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক কর্মচারি কর্মসূচিতে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!