মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের অত্যধিক ভাড়া কমাতে বিমান মন্ত্রীর নিকট খোরশেদ আলম সুজনের অনুরোধ।

0 ১৯৭

মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের অত্যধিক ভাড়া কমাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী’র নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।গতকাল সোমবার(১৩ ডিসেম্বর ২০২১ইং)এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি মন্ত্রীর নিকট এ অনুরোধ জানান।

এসময় তিনি বলেন হঠাৎ করেই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী দেশগুলোর ফ্লাইটের ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের বিমান ভাড়া ৭০ থেকে ৯৫ হাজার টাকা করা নির্ধারণ করা হয়েছে।এভাবে বিমানের টিকেটের দাম বাড়ানোর ফলে মধ্যপ্রাচ্যগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধা খ্যাত প্রবাসীরা আর্থিকভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন।এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দেশে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা সুজনকে তাদের দুর্দশার কথা জানালে তিনি বিমান মন্ত্রীর নিকট ভাড়া কমানোর এ অনুরোধ রাখেন।

তিনি আরো বলেন অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত,পাকিস্তান,নেপাল কিংবা শ্রীলঙ্কা হতে মধ্যপ্রাচ্যগামী দেশগুলোর বিমানের টিকেটের মূল্য ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা।এ অবস্থায় বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা খুবই বিপাকে পড়েছেন। এছাড়া প্রায় দীর্ঘ ২ বছর করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের মুসলমানগণ ওমরাহ আদায় করতে পারেননি।

বর্তমানে সৌদি আরব শর্তসাপেক্ষে ওমরাহ আদায়ের সুযোগ করে দিয়েছে।প্রতিবছর এ সময় বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য হারে মুসলমানগণ ওমরাহ আদায়ের জন্য সৌদি আরব গমন করে থাকেন।করোনাভাইরাসের জন্য বন্ধ থাকায় বর্তমানে সে সংখ্যা দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।এমতাবস্থায় অত্যধিক ভাড়ার কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের ওমরাহ আদায় বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।তাছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় সব রিক্রুটিং এজেন্সি দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্যের কিছুটা সুযোগ সৃষ্টি হলেও অত্যধিক ভাড়ার কারণে তাদের ফ্লাইটের টিকেট বিক্রিও বন্ধ রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে নতুন উদ্যোমে ব্যবসা বাণিজ্য চালু করছে।বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকুরি এবং ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। যার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার নতুন ভিসাপ্রাপ্ত এবং ছুটিতে দেশে আসা প্রবাসী।

এমনিতে করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে কঠোর লকডাউন থাকায় দেশের রেমিটেন্স আয়ে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে নতুন ভিসাপ্রাপ্ত এবং ছুটিতে দেশে আসা প্রবাসীরা যদি সঠিক সময়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারেন তাহলে এ সমস্ত প্রবাসীরা চাকুরিও হারাতে পারেন বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যগামী দেশগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ যাত্রীই চট্টগ্রামের বাসিন্দা।কিন্তু এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইট চালু করা হয়নি।প্রতিদিন হাজার হাজার প্রবাসীকে নিরুপায় হয়ে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।এতে প্রচুর পরিমাণে ভোগান্তিতে পড়ছেন চট্টগ্রামের প্রবাসীরা।চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশিরভাগ যাত্রীর ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা সময় নষ্ট হচ্ছে।অথচ চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট চালু করা গেলে ৩ থেকে ৪ ঘন্টার মধ্যে প্রবাসীরা স্ব-স্ব গন্তব্যে পৌঁছাতে পারতো।তাই কালবিলম্ব না করে চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী দেশগুলোতে সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবী জানান সুজন।

তিনি ভাড়া নৈরাজ্য কমাতে মধ্যপ্রাচ্যগামী বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে সৌদিআরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দ্রুত ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি, এয়ারলাইন্সগুলো যাতে টিকেট সিন্ডিকেট করে অনৈতিকভাবে ২ থেকে ৩ গুণ ভাড়া নির্ধারণ করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন নতুন এয়ারলাইন্সকে ফ্লাইট পরিচালনার আমন্ত্রণ জানানোর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিমান মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া বিমানের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা কোন গোষ্ঠী যাতে অযৌক্তিকভাবে বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকারের সাথে প্রবাসীদের দূরত্ব সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!