যশোরে ৫ বছরে আয় বেড়েছে ইউপি চেয়ারম্যানদের

0 ১৭১

হাফিজুর শেখ যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ যশোরে পাঁচজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে তাদের আয় তুলনামূলক বেড়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) শহরের একটি হোটেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রাইটস যশোর আয়োজিত ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় চেয়ারম্যানদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করা হয়।
যশোর জেলার ১০ ইউনিয়নে ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ জোরদারকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে রাইটস যশোর। এ প্রকল্পের আওতায় প্রকাশিত পাঁচজন ইউপি চেয়ারম্যানের সম্পদ বিবরণীতে দেখা গেছে, পাঁচ বছর আগে মণিরামপুরের ভোজগাতি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ও তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল সাড়ে তিন লাখ টাকা। বর্তমানে তার বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে এক দশমিক ৫ শতক জমি ও নির্ভরশীলদের নামে ৩০ শতক জমি। ধার ও ঋণ আছে ছয় লাখ টাকা।
বাঘারপাড়ার বন্দবিলা ইউপি চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান ও তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে আয় বেড়ে হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ১৫ একর জমি ও স্ত্রীর নামে ২০ ভরি সোনার গহনা। তার দেনার পরিমাণ ছয় লাখ টাকা।
কেশবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন ও তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ২২ হাজার টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ৩ বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে ৯ শতক ও নির্ভরশীলদের নামে ৮ বিঘা জমি আছে। ব্যাংক ঋণ আছে ৯ লাখ টাকা।
অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন ও তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ১৩ লাখ ২১ হাজার ৪০৮ টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে ৫ শতক, নিজের ২ দশমিক ১৮ একর জমি ও পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি, স্ত্রীর ১০ দশমিক ৫ ভরি সোনার গহনা ও নিজের চার লাখ টাকা মূল্যের জিপ গাড়ি আছে।
শার্শার বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান ও তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বর্তমানে তাদের বার্ষিক আয় ৮৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৯ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে ৮ বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে দশমিক ৩৫ শতক জমি, নির্ভরশীলদের নামে দশমিক ২৫ শতক জমি ও যৌথ মালিকানার পাঁচ বিঘা জমির এক-তৃতীয়াংশ। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংক গ্যারান্টি ২০ লাখ টাকা ও ওষুধ-সিমেন্টের দোকান ৪৬ লাখ টাকা।
বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. ইয়াকুব আলী মোল্লার সভাপতিত্বে সম্পদ বিবরণী প্রকাশ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত, দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর (ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাডমিন) কামরুল হাসান ভূঁইয়া, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মাস্টার নূর জালাল, জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক। এসময় আরও বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব যশোরের সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের পরিদর্শক শামীম মুসা, প্রেমবাগ ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন, সাংবাদিক সাইফুর রহমান সাইফ, মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাইটস যশোরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এসএম আজহারুল ইসলাম

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!